পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/১৭৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

(ঙ) সীতারামপুর—ধানবাদ–গোমো জংশন . (গ্রাও কর্ড লাইন) । কুলটি—সীতারামপুর হইতে ৩ মাইল দূর। ইহা খনি অঞ্চলের একটি প্রসিদ্ধ স্থান এই স্থানে ও নিকটবৰ্ত্তী হীরাপুরে লৌহের কারখানা আছে। . বরাকর—সীতারামপুর জংশন হইতে ৫ মাইল দূর। ইহা বৰ্দ্ধমান জেলার শেষ স্টেশন। ইহা বরাকর নামক নদীর তীরে অবস্থিত। এই নদীর পরপার হইতে মানভূম জেলার আরম্ভ। এখানে নদীর উপর গ্রাগুট্রাঙ্ক রোড ও রেল লাইনের দুইটি সুন্দর সেতু আছে। ইহা একটি বিখ্যাত ব্যবসায়ের স্থান। এখানকার জলহাওয়াও বেশ ভাল। এই স্থানে কতকগুলি প্রস্তর নিৰ্ম্মিত সুন্দর পুরাতন মন্দির আছে। বরাকর হইতে ৪ মাইল উত্তরে অবস্থিত হাদলা পাহাড় নামক স্থানে “কল্যাণেশ্বরী" নামে একটি প্রস্তর নিৰ্ম্মিত সুন্দর প্রাচীন দেবী মন্দির আছে। প্রবাদ যে প্রায় ৪৫ শত বৎসর পূবেৰ কল্যাণ সিংহ নামক জনৈক রাজা এই মন্দির প্রতিষ্ঠা করিয়াছিলেন। কল্যাণেশ্বরীর কোন প্রতিমুক্তি নাই। একখানি প্রস্তরখণ্ডকে দেবীর প্রতিনিধিরূপে পূজা করা হয়। কথিত আছে একদিন এক ব্ৰাহ্মণ মন্দির পাশ্ব স্থ জলাশয় হইতে অলঙ্কার শোভিত দুইটি হস্ত উঠিতে দেখেন। তিনি রাজা কল্যাণ সিংহকে ইহা বলিলে রাজা আসিয়াও হস্ত দুটি দেখিতে পান। রাত্রে দেবী রাজাকে স্বপ্নে দেখা দিয়া এই প্রস্তর খানির পূজা করিতে নির্দেশ দান করেন। কুমারপুবি—সীতারামপুর হইতে ৭ মাইল দূর। ইহা মানভূম জেলার অন্তর্গত একটি বিখ্যাত শ্রমিক কেন্দ্র। এখানে অনেকগুলি কলকারখানা আছে। ধানবাদ জংশন—সীতারামপুর হইতে ২৫ মাইল। ইহা মানভূম জেলার মহকুমা ও খনি অঞ্চলের একটি প্রসিদ্ধ শহর। এই শহরটি অতি সুন্দর ও পরিষ্কার পরিচছনা। এই স্থান হইতে একটি শাখা লাইন কয়লার খনি অঞ্চলের ঝরিয়া হইয়া ৮ মাইল দূরবর্তী পাথরডিহি পৰ্য্যন্ত গিয়াছে। আর একটি শাখা লাইন কাটুরাতৃগড় হইয়া ৩২ মাইল দূরবত্তী বামে পয্যন্ত গিয়াছে। কাইরাসগড়ের ৮ মাইল দক্ষিণে দামোদরের উভয় কুলে চেচগাগড় ও বেলোঃ নামক গ্রামে বহু পুরাতন মন্দিরাদির ধংসাবশেষ দৃষ্ট হয়। মন্দিরগুলির সুন্দর কারুকার্য্যের পরিচয় এখনও পাওয়া যায়। এই স্থানদ্বয়ে হিন্দু বৌদ্ধ ও জৈন মুক্তি পাওয়া গিয়াছে। বেলোপ্পায় একটি প্রকাও নগ্ন জৈন মুক্তি আছে। - গোমো জংশন—সীতারামপুর জংশন হইতে ৪৯ মাইল। ইহা একটি প্রসিদ্ধ জংশন স্টেশন। বাংলা নাগপুর রেলপথের একটি শাখা লাইন আদড় হইতে বাহির হইয়া এই স্থানে আসিয়া মিলিত হইয়াছে। ইহাও একটি বাণিজ্য প্রধান স্থান। পরিশিষ্ট বাংলা দেশ হইতে উত্তর ও পশ্চিম অঞ্চলে যাইতে হইলে পূর্বভারত রেলপথ দিয়াই যাইতে হয়। গয়া, কাশী, বিন্ধ্যাচল, প্রয়াগ, মথুরা, অযোধ্যা, হরিদ্বার, প্রভৃতি প্রসিদ্ধ তীর্থ এবং দিল্লী, লক্ষেী, কানপুর, ফয়জাবাদ, পাটনা, সীসারাম প্রভৃতি বিখ্যাত ঐতিহাসিক নগরীগুলি এই রেলপথের উপর অবস্থিত। সুতরাং এই রেলপথে ভ্রমণ না করিলে উত্তর ভারত সম্বন্ধে প্রত্যক্ষ জ্ঞান লাভ করিতে পারা যায় না | .