পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/২৫৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আসাম বাংলা রেলপথে כלל সাহেব ১৬২৭ খৃষ্টাব্দে পদ্মাবতী কাব্য রচনা করেন। সৈয়দ মুসার অনুরোধে এই কবি “সায়ফল মুলুক” ও “ বদিউজজমাল’ নামক ইরাণী গ্রন্থের বঙ্গানুবাদ করেন। অনুবাদ কাৰ্য্য মাগনঠাকুরের মৃত্যুর পর সমাপ্ত হয়। শাহাজীবাজার—আখাউড়া জংশন হইতে ৩০ মাইল দূর। ইহা শ্রীহট্ট জেলার প্রাচীন তরফ রাজ্যের অন্তর্গত। স্টেশনের নিকটেই ফতেপুর নামক গ্রামে রঘুনন্দন পাহাড়ের উপর বিখ্যাত ফকির ও দ্বাদশ আউলিয়ার অন্যতম শাহ ফতে গাজীর দরগাহ ও কবর অবস্থিত। স্থানটি যুসলমানগণের নিকট বিশেষ পবিত্র। প্রতি বৎসর অগ্রহায়ণ মাসের শেষদিনে গাজীর সারণার্থ এখানে একটি , वन ड्यू রঘুনন্দন পাহাড়টি উত্তর-দক্ষিণে প্রায় ১৮ মাইল দীর্ঘ এবং ইহার সবের্বাচচ শৃঙ্গ উচচতায় ৭০০ ফুটু । . . . শায়েস্তাগঞ্জ জংশন—আখাউড়া জংশন হইতে ৪৬ মাইল দূর। কেহ কেহ বলেন যে প্রাচীন তরফ রাজ্যের প্রসিদ্ধ সৈয়দ বংশীয় হামিদ রাজার পুত্র সৈয়দ শায়েস্তা মিয়া এই স্থানে একটি বাজার বসাইয়া স্বীয় নামানুসারে উহার শায়েস্তাগঞ্জ নাম রাখেন। মতান্তরে, বাংলার নবাব শায়েস্তা খাঁ এই গঞ্জের প্রতিষ্ঠাতা। শায়েস্তা খাঁ মগ ও পর্তুগীজ জলদসু্যগণের অত্যাচার দমন করিয়াছিলেন । ' স্টেশনের নিকটেই দাউদ নগরের দরগাহ অবস্থিত। এই দরগাহের প্রাচীন জলাশয়ে বহু গজাল মাছ ভাসিতে দেখা যায়। ইহা প্রসিদ্ধ দ্বাদশ আউলিয়ার অন্যতম সৈয়দ শাহ সয়ে মিরাত উদ-দীনের প্রপৌত্র প্রসিদ্ধ শাহ দাউদ সাহেবের দরগাহ। দাউদ সাহেবের বাসস্থান বলিয়া এই স্থানের নাম হয় দাউদনগর। - শায়েস্তাগঞ্জের নিকটে খোয়াই নদীর তীরস্থ বৃহদাকৃতি “ তুঙ্গেশ্বর ” মহাদেব সুপ্রসিদ্ধ। কথিত আছে, এখানে সতীর নয়টি অঙ্গুরীয়ক পতিত হইয়াছিল; সেই জন্য এই স্থান নবরত্ন উপপীঠ নামে পরিচিত। তুঙ্গেশ্বর মহাদেবের কোন মন্দির নাই। প্রবাদ একবার মন্দির নির্মাণের ? আয়োজন হইলে পূজারী স্বপ্ন দেখেন যে মহাদেব যেন তাঁহাকে বলিতেছেন যে তিনি মন্দিরে থাকিতে ভালবাসেন না। জনশ্রুতি, যে প্রায় আটশত বৎসর পূবেৰ্ব শম্ভুনাথ বাচস্পতি স্বপ্নাদিষ্ট হইয়া এই শিবের প্রকাশ করেন। ইহার সম্বন্ধেও কপিলা গাভীর দুগ্ধদানের উপাখ্যান প্রচলিত আছে। লোকের বিশ্বাস এই শিব ক্রমশ: বাড়িতেছেন; আটশত বৎসরে ইনি বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠ পরিমাণ হইতে প্রায় তিন হাত উচচ ও পাঁচ হাত পরিধিতে পরিণত হইয়াছেন। কালাপাহাড় তুঙ্গেশ্বরের দক্ষিণদিক নাকি ভাঙ্গিয়া দিয়াছিলেন ; শিবের ক্রমশঃ বৃদ্ধি হইতেছে বলিয়া সেই ভগ্নস্থান নাকি ক্রমে ক্রমে পূর্ণ * হইয়া আসিতেছে। শায়েস্তাগঞ্জ জংশন হইতে একটি শাখা লাইন উত্তর-পশ্চিমদিকে আট মাইল দূরবর্তী হবিগঞ্জ ; বাজার পর্য্যন্ত গিয়াছে। অপর একটি শাখা লাইন দক্ষিণ-পূর্ব দিকে ১৭ মাইল দূরবর্তী বালাবাজার পর্য্যন্ত গিয়াছে। নরপতি-শায়েস্তাগঞ্জ জংশন হইতে দক্ষিণ-পূবর্ব দিকে প্রায় ৩ মাইল। তরফ রাজবংশের ইত্ৰাইল মুলক-উল-উলেমার কথা আগে বলা হইয়াছে। ইহার পুত্র শাহ ইলিয়াস কুদস বিশিষ্ট পণ্ডিত ও সাধক ছিলেন। কোয়াই নদীর তীরে নির্জনে তিনি সাধনা করিতেন। কিংবদন্তী