পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পূবৰ্ববঙ্গ রেলপথে বাংলাদেশ &家 গোয়ালপাড়া—ধুবড়ী হইতে প্রায় ৪০ মাইল উত্তর-পূবেৰ ব্ৰহ্মপুত্রের অপর বা দক্ষিণ তীরে গারোপাহাড়ের পাদদেশে গোয়ালপাড়া অবস্থিত। আসাম-সুন্দরবন ডেস্প্যাচ স্টীমার পথে ৯ ঘন্টার পথ। পূবেৰ্ব এই স্থানেই জেলার সদর ছিল। যাতায়াতের সুবিধার জন্য পরে ধুবড়ীতে জেলার সদর স্থানান্তরিত করা হয়। বর্তমানে গোয়ালপাড়া একটি অপ্রধান স্থানে পরিণত হইয়াছে। ব্ৰহ্মপুত্র কুলে প্রায় ৪০০ ফুট উচচ পাহাড়ের উপর অবস্থিত এই শহটির দৃশ্য অতি চমৎকার। গোয়ালপাড়া জেলার এলাকাভুক্ত স্থান এক সময়ে রংপুর জেলার অধীন ছিল। গোয়ালপাড়া শহরের বিপরীত দিকে ব্ৰহ্মপুত্র নদের উত্তর তীরে অবস্থিত যোগীঘোপা একটি দ্রষ্টব্য স্থান। এখানে ব্ৰহ্মপুত্র তীরে পাহাড়ের গাত্রে কতকগুলি গুহা আছে। প্রবাদ, অতি প্রাচীন কালে এই স্থানে কয়জন যোগী তপস্যা করিতেন। এখানে দুধনাথ শিবের মন্দির নামে একটি প্রাচীন শিবমন্দিরও আছে। মুঘলেরা যখন আসাম আক্রমণ করেন, তখন আহোমগণ যোগীঘোপার গুহাগুলিকে দুৰ্গরূপে ব্যবহার করিয়া তাঁহাদের আক্রমণ প্রতিহত করিয়াছিলেন। যোগীঘোপায় ইংরেজদের একটি কুঠি ছিল। এখনও চারটি নামহীন পুরাতন সমাধি দৃষ্ট হয়। যোগীঘোপা ধুবড়ী হইতে স্টীমার পথে গোয়ালপাড়ার ঠিকৃ আগের স্টেশন। বঙ্গাইগাঁও স্টেশন হইতে যোগীঘোপা ২০ মাইল দক্ষিণে ; বরাবর ভালো রাস্ত আছে। § (ছ) গোলকগঞ্জ জংশন—রঙ্গিয়া জংশন–পাণ্ডু । গোলকগঞ্জ জংশন ছাড়াইয়া পূর্ববঙ্গ রেলপথের মাঝারি মাপের প্রধান লাইন গোয়ালপাড়া জেলার গভীর জঙ্গলের মধ্য দিয়া পূবর্ব মুখে চলিয়া গিয়াছে। জঙ্গল মধ্যে বা জঙ্গলের নিকটে অবস্থিত বাশবাড়ী, টিপকাই, সাপট গ্রাম, ফকিরাগ্রাম, কোকরাঝাড় ও বামুগাও স্টেশন হইতে অরণ্য জাত কাষ্ঠাদি চালান যায়। রেলপথ সাপটগ্রামের নিকট সঙ্কোশ, কোকরাঝাড়ের নিকট সরলভাঙ্গা বা গৌরাং ও বাসুগার নিকট চম্পামতী নদী পার হইয়াছে। নদীগুলি ব্ৰহ্মপুত্রে গিয়া পড়িয়াছে। ফকিরাগ্রাম—পাবর্বতীপুর জংশন হইতে ১০৬ মাইল। টেশনের ১২ মাইল দক্ষিণে সঙ্কোশ ও গৌরাং নদী যে স্থানে ব্ৰহ্মপুত্রে মিলিত হইয়াছে তাহার নিকট অবস্থিত বিলাসীপাড়া একটি প্রসিদ্ধ বন্দর। ধুবড়ী হইতে গোয়ালপাড়া প্রভৃতি যাইতে স্টীমার পথে বিলাসীপাড়া একটি সটীমার স্টেশন। ময়মনসিংহ জেলা হইতে আগত এখানকার জমিদার বংশের প্রসিদ্ধি আছে। বিলাসীপাড়া হইতে ৫ মাইল পশ্চিমে বগড়ীবাড়ীও একটি বাণিজ্য প্রধান স্থান ; পবর্বতজোয়ার জমিদার বংশের এক শাখার বাস এই স্থানে । , -- বঙ্গাইগাও—পাবর্বতীপুর জংশন হইতে ১৩০ মাইল। এখানে কমলা লেবুর বাগান আছে এবং নানা স্থানে ইহা চালান যায়। স্টেশন হইতে ১০ মাইল দক্ষিণ-পূবেৰ উত্তর শালমরা একটি বড় গ্রাম ও থানা ; এখানকার এণ্ডি রেশমের খ্যাতি আছে। উত্তর শালমার দ্বইতে ৩ মাইল পূর্ব দিকে অভয়াপুরী গ্রামে সুপ্রসিদ্ধ বিজনি রাজবংশের বাসস্থান। ইহার কোচরাজবংশের এক শাখা। কোচবিহার স্টেশন দ্রষ্টব্য। এখানকার রাজ প্রাসাদে সাম্রট শের শাহের কনস্তান্নতিনোপলের সৈয়দ আহমদ নিৰ্ম্মিত একটি তোপ আছে। উত্তর শালমার হইতে ১০ মাইল দক্ষিণে যোগীঘোপা ; ইহার কথা ধুৰূড়ী প্রসঙ্গে বলা হইয়াছে।