পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/৫৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8O ज्ञां२लांग्न बगc বিখ্যাত। গল্ফ খেলার মাঠটি সমগ্র পৃথিবীর মধ্যে দ্বিতীয় স্থানীয়। শিলং শহরের অতি নিকটে অবস্থিত বিশপৃফলু ও বিডন ফল্‌ নামক দুইটি জল প্রপাত ভ্রমণকারী মাত্রেরই দ্রষ্টব্য। শিলং অতি স্বাস্থ্যকর স্থান। এখানকার কুহেলিকা (mist) ও পাইন তরুর হাওয়া শরীরের পক্ষে বিশেষ উপকারী বলিয়া চিকিৎসকগণের অভিমত। ইহা বাঙালীদের অতি প্রিয় পাবর্বত্য স্বাস্থ্যনিবাস | শিলংএ অতি উৎকৃষ্ট মাখন ও নানাপ্রকার স্বস্বাদু ফলমূল সুলভে কিনিতে পাওয়া যায় | চেরাপুঞ্জি—শিলং হইতে চেরাপুঞ্জির দূরত্ব প্রায় ৩৭ মাইল। এই দুই স্থানের মধ্যে প্রত্যহ মোটরবাস যাতায়াত করে। এই পথের দৃশ্যও অতি মনোরম। এই পথে ছয় মাইল দূরে আপার শিলং অবস্থিত। এখানে একটি সরকারী কৃষিক্ষেত্র আছে। আপার শিলংএ এলিফ্যান্ট বা হস্তী প্রপাত ও গেইটু ফন্ত্ৰ নামক দুইটি জলপ্রপাত আছে। হস্তী প্রপাতটি রাস্তার অতি নিকটে অবস্থিত। এই প্রপাতটি তিনটি বিভিন্নস্তরে পাহাড়ের গা বাহিয়া নামিয়া আসিয়াছে; দেখিতে হস্তিগুণ্ডের ন্যায় বলিয়া ইহার “ হস্তী প্রপাত “ নাম হইয়াছে। ১৪ মাইলের পর রাস্তাটি দ্বিধ বিভক্ত হইয়া একটি পথ শ্রীহট্টের দিকে চলিয়া গিয়াছে। ইহার পর হইতে পথের দুই পার্শ্বে গভীর অরণ্য দৃষ্ট হয়। এই পথে বহু বাক আছে। এক এক স্থানের বঁাক ইংরেজী U, V প্রভৃতি অক্ষরের আকৃতির ন্যায়। গাড়ীতে বসিয়াই পথের পাশ্বে মধ্যে মধ্যে যুটিং হইতে চুণ প্রস্তুত করিবার চুল্লী দেখিতে পাওয়া যায়। এই পথ দিয়া চলিতে চলিতে বহু খাসিয়া নরনারীর সহিত দেখা হয়। কেহ এক্কা লইয়া চলিয়াছে, কাহারও পৃষ্ঠে বোঝা, আবার কেহ কেহ বা পথের পাশ্ব স্থ অরণ্য হইতে কাষ্ঠাদি সংগ্ৰহ করিতেছে। চেরাপুঞ্জি শহরটিও শিলংএর ন্যায় অধিত্যকার উপর নিৰ্ম্মিত। পূবেৰ্ব ইহা খাসিয়া-জয়ন্তীয় পাহাড় নামক জেলার সদর শহর ছিল। কিন্তু অত্যন্ত বৃষ্টিপাতের জন্য স্থানটি অস্বাস্থ্যকর বলিয়া ১৮৭৪ খৃষ্টাব্দ হইতে এই স্থান হইতে জেলার দপ্তর শিলংএ স্থানান্তরিত করা হয়। পৃথিবীর মধ্যে চেরাপুঞ্জিতে সবর্বাপেক্ষা অধিক বৃষ্টিপাত হয়। এখানকার বার্ষিক বৃষ্টিপাতের পরিমাণ গড়ে ৪২৬ ইঞ্চি। ১৮৬১ খৃষ্টাব্দে এখানে ৯০৩ ইঞ্চি বৃষ্টিপাত হইয়াছিল। যে পাহাড়ের মালভূমিতে চেরাপুঞ্জি শহর অবস্থিত তাহার নাম চেরা পাহাড়। ইহার উচচতা সমুদ্র পৃষ্ঠ হইতে ৪,০০০ হাজার ফুট। ইহার একটি বৈশিষ্ট্য এই যে অন্যান্য পবর্বতের মত ইহা ক্রমশ: নিযু না হইয়া একেবারে শহরের প্রান্তে খাড়া ভাবে গিয়া শেষ হইয়াছে। এই স্থানে মুশমাই নামে একটি বৃহৎ জলপ্রপাত আছে। বর্ষাকালে ইহার বিস্তৃতি প্রায় ১৩০০ ফুট হয়। ইহার জলরাশি প্রায় ১৮০০ ফুট নিয়ে গিয়া পড়িতেছে। উচচতার দিক দিয়া এই জলপ্রপাত পৃথিবীর মধ্যে চতুর্থ স্থান অধিকার করে। চেরা পাহাড় যেখানে শেষ হইয়াছে তাহার পর শত মাইলেরও অধিক বিস্তৃত শ্রীহট্টের সমতল ক্ষেত্র দেখা যায়। মুশমাই প্রপাতের নিকট হইতে এই সমতল ক্ষেত্রের দৃশ্য অতি অপূর্ব। চেরাপুঞ্জির নিকটে একটি পবর্বত-গুহা আছে। ইহার প্রস্তরময় ছাদ ও প্রাচীরে সব সময়েই বিলু বিলু জল সঞ্চিত থাকে। তাহার উপর আলোক পড়িলে লক্ষ লক্ষ নক্ষত্রের শোভার ন্যায় সুন্দর দৃশ্যের স্বষ্টি হয়। চেরাপুঞ্জি হইতে ছাতক পর্য্যন্ত একটি রোপৃ-ওয়ে আছে। ইহাও চেরাপুঞ্জির অপর একটি দ্রষ্টব্য। শিলং হইতে আহারাদি করিয়া বেলা ১১টার সময় রওনা হইলে সন্ধ্যার পূবেবই চেরাপুরি দেখিয়া ফিরিয়া আসা যায় ।