পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -প্রথম খণ্ড.pdf/১৫৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8ు - . বাংলায় ভ্ৰমণ মাইল উত্তর-পশ্চিমে দেবীগঞ্জ একটি বদ্ধিষ্ণু গ্রাম। ইহা কোচবিহার মহারাজার চাকলাজাত জমিদারীর সদর তহশীল । হলদিবাড়ী—কলিকাতা হইতে ৩০০ মাইল। এই স্থানটি পাটের কারবারের জন্য বিখ্যাত। ইহা কোচবিহার রাজ্যের অন্তর্গত । - জলপাইগুড়ি—কলিকাতা হইতে ২৯৬ মাইল দূর। ইহা জলপাইগুড়ি জেলার ও রাজশাহী বিভাগের সদর শহর। শহরটি ত্রিস্রোতা বা তিস্তা নদীর তীরে অবস্থিত। শহরের মধ্য দিয়া কারল নামক একটি ছোট নদী প্রবাহিতা। শহরটির দৃশ্য অতি সুন্দর। কারল নদীর লৌহসেতু হইতে মেঘ ও কুয়াসামুক্ত পরিষ্কার দিনে তুষারাচ্ছন্ন হিমালয়ের মহান দৃশ্ব দৃষ্টিগোচর হয়। জলপাইগুড়ি চায়ের ব্যবসায়ের একটি প্রধান কেন্দ্র । এই জেলার ডুয়ার্স অঞ্চলে বহু চা-বাগান আছে। শহরে ডাকবাংলা, হোটেল, ধৰ্ম্মশালা ও সরাই প্রভৃতি আছে। ইহা একটি উন্নতিশীল স্থান। এখানে একটি মেডিক্যাল স্কুল ও মেয়েদের উচ্চ ইংরেজী বিদ্যালয় আছে। এই শহরে পিচু দেওয়া রাস্তা, কলের জল, বৈদ্যুতিক আলো, টেলিফোন ও সৰ্ব্বপ্রকার যান-বাহন আছে। কথিত আছে, এই স্থানে পূৰ্ব্বে প্রচুর জলপাই গাছ ছিল বলিয়। জলপাইগুড়ি নাম হইয়াছে। তিস্ত নদীর অপর পারে শহরের ঠিক বিপরীত দিকে “বাণেজ ঘাট” নামে বেঙ্গল ডুয়ার্স রেলওয়ের একটি স্টেশন আছে। জলপাইগুড়ি জেলার অধিকাংশ স্থান পূর্বে প্রাচীন কামতাপুর ও কোচবিহার রাজ্যের অন্তর্গত ছিল। ইহার পূর্বাঞ্চল বা ডুয়ার্স প্রদেশ ভূটান রাজ্যের সীমান্ত পর্যন্ত বিস্তৃত। ভূটানী ভাষায় ডুয়ার্স কথাটির অর্থ হুয়ার, দ্বার বা সীমান্ত। ব্রিটিশ শাসনের পূর্বে ভূটিয়ারা দুয়ার অঞ্চল কোচবিহার রাজ্য হইতে বিচ্ছিন্ন করিয়াছিল। ১৮৬৪ খৃষ্টাব্দে যখন এই প্রদেশ ভূটিয়াদের হস্তচু্যত হইযা ব্রিটিশ অধিকারভুক্ত হয় তখন ইহাকে দুই অংশে ভাগ করা হয়। পূৰ্ব্বাংশ আসামের গোয়ালপাড়া জেলার সহিত সংযুক্ত হয় এবং পশ্চিমাংশ লইয়া “ওয়েষ্টাৰ্ণ ডুয়ার্স” নামে বাংলার একটি নূতন জেলা গঠিত হয় এবং একজন ডেপুটি কমিশনারের উপর উহার শাসনভার অপিত হয়। ঐ সময় বর্তমান জলপাইগুড়ির “রেগুলেশন’ অঞ্চল রংপুর জেলার অধীন ছিল। ১৮৬৯ খৃষ্টাব্দে এই অঞ্চলকে রংপুর হইতে বিচ্ছিন্ন করিয়া “ওয়েষ্টাৰ্ণ ডুয়ার্সের" সহিত সংযুক্ত করা হয় এবং জলপাইগুড়ি নামে একটি নূতন জেলা গঠিত হয়। ডুয়ার্স অঞ্চল এখনও “নন রেগুলেটেড” বা চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের বহিভূত অঞ্চল। জলপাইগুড়ি জেলায় তুইটি পুরাকীৰ্ত্তি আছে। একটি তিস্তার অপর পারে জলপাইগুড়ি শহর হইতে ৯ মাইল দূরে অবস্থিত জল্পেশ্বর মন্দির। ইহা একটি বিখ্যাত শৈবপীঠ; শিবরাত্রির মেলার সময় এখানে বহু যাত্রীর সমাগম হয়। মেলাতে অনেক পাহাড়িয়া জাতীয় লোক আসে এবং নানাপ্রকার জীব-জন্তুর ক্রয়-বিক্রয় হয়। সুন্দর সুন্দর ভূটানী কুকুর এই সময় কিনিতে পাওয়া যায়। জল্লেশ লিঙ্গ ভূগর্ভে প্রোথিত। প্রবাদ যে খৃষ্টীয় প্রথম শতাব্দীতে প্ৰাগজ্যোতিষপুর (বর্তমান গৌহাটী) রাজ্যের রাজা 10a - .