পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -প্রথম খণ্ড.pdf/১৫৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পূর্ববঙ্গ রেলপথে বাংলাদেশ ১৪৫

 প্রভূতি স্থানে যাওয়া যায়। রেলের কল্যাণে পাৰ্ব্বতীপুর একটি নগণ্য পল্লী হইতে একটি বর্দ্ধিষ্ণু শহরে পরিণত হইয়াছে।

   পাৰ্ব্বতীপুরের অনতিদূরে প্রাচীন বাংলার একটি দুর্গের ধ্বংসাবশেষ আছে। ইহা বিরাট রাজার সীমান্তরক্ষী দুর্গ ছিল বলিয়া কথিত । প্রবাদ এই দুর্গে বিরাট রাজার সেনাপতি ও শ্যালক কীচক বাস করিয়াছিলেন। দুর্গটির আকৃতি সমচতুষ্কোণ ও পরিমাণফল প্রায় অৰ্দ্ধ মাইল । দুর্গের পরিখা ও প্রাকার গভীর জঙ্গলের দ্বারা সমাচ্ছন্ন। পাৰ্ব্বতীপুরের থানার নিকটবৰ্ত্তী একটি প্রাচীন বৃক্ষের তলদেশে একটি প্রস্তর নিৰ্ম্মিত লাঙ্গল ও কৃষি কাৰ্য্যের উপযোগী প্রস্তর নিৰ্ম্মিত আরও কয়েকটি দ্রব্য আছে। স্থানীয় লোকের বিশ্বাস যে এইগুলি কীচকের নিধনকৰ্ত্ত। মধ্যম পাণ্ডব ভীমের পরিত্যক্ত দ্রব্য। এই বস্তুগুলির সহিত ক্ষৌণীনায়ক ভীমের (“সাস্তাহার” ও “জয়পুরহাট” দ্রষ্টব্য) কোন সম্বন্ধ আছে কি না, তাহা আজিও নির্ণীত হয় নাই ।
   সৈয়দপুর- কলিকাতা হইতে ২৪৩ মাইল দূর। ইহা রংপুর জেলার অন্তর্গত একটি বর্দ্ধিষ্ণু স্থান। এখানে পূর্ববঙ্গ রেলপথের মাঝারি মাপের ইঞ্জিন ও গাড়ী মেরামত ও প্রস্তুত করিবার কারখানা অবস্থিত। এই কারখানায় চার পাচ হাজার লোক কাজ করে। সৈয়দপুরে ট্রাফিক বিভাগের একটি ডিষ্ট্রিক্ট বা জেলার সদর অবস্থিত। এখানকার রেলওয়ে উপনিবেশটি একটি সুদৃশ্য শহর। আধুনিক সভ্যতার প্রায় সকল রকম সুবিধাই এখানে আছে। সৈয়দপুর পাটের একটি প্রধান গঞ্জ ।
   দরওয়ানি-কলিকাতা হইতে ২৫০ মাইল দূর । ইহা রংপুর জেলার একটি বিখ্যাত পাটের গঞ্জ। স্টেশনের অনতিদূরে একজন পীরের সমাধি আছে। তথায় প্রতি বৎসর পৌষ-মাঘ মাসে একমাস স্থায়ী একটি বিরাট মেলা হয়। এই মেলায় হাতী, ঘোড়া, উট, মহিষ, গরু ও ভেড়া প্রভৃতি পশু কিনিতে পাওয়া যায়। 


   নীলফামারি- কলিকাতা হইতে ২৫৫ মাইল দূর। স্টেশন হইতে নীলফামারি শহরের দূরত্ব দুই মাইল । ইহা রংপুর জেলার একটি মহকুমা। এক বিস্তীর্ণ ও সমতল বালুকাময় ক্ষেত্রের উপর শহরটি অবস্থিত। কথিত আছে, পূৰ্ব্বে এখানে যথেষ্ট নীলের চাষ হইত বলিয়া স্থানের নাম নীলফামারি হয়। এখনও একটি পুরাতন নীলকুঠির ধ্বংসাবশেষ এখানে দেখিতে পাওয়া যায় ।
   ডোমার—কলিকাতা হইতে ২৬৬ মাইল দূর। ইহা একটি বর্দ্ধিষ্ণু শহর ও বিখ্যাত বাণিজ্যকেন্দ্র । করতোয়ার প্রবাহ হ্রাসের পর ঘোড়াঘাটের পতন ঘটিলে বাণিজ্যকেন্দ্র হিসাবে ডোমারের অভু্যদয় ঘটে।
   ডোমারের নিকটবৰ্ত্তী পাঙ্গ গ্রামে জনৈক পীরের আস্তানা আছে। সাধারণতঃ ইনি “পাঙ্গা পীর” নামে পরিচিত। প্রতি বৎসর পৌষ মাসে এই পীরের উরস বা মৃত্যুতিথি উপলক্ষে এই স্থানে একমাসব্যাপী মেলা হইয়া থাকে। দরওয়ানির মেলার ন্যায় এই মেলায়ও বিস্তর গৃহপালিত পশুর ক্রয়-বিক্রয় চলে। স্টেশন হইতে সাড়ে চার

10 - -