পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -প্রথম খণ্ড.pdf/১৯০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Yoኳ” বাংলায় ভ্রমণ লোক এই বাধে ভ্রমণের জন্য আসিয়া থাকেন। ক্যানিং হইতে প্রচুর পরিমাণে ধন চাউল, গরাণকাঠ, ও গোলপাত প্রভৃতি আমদানি হয় । ক্যানিং বা মাতলা শহরের উত্তরদিকে মাতলা বিদ্যাধরী নদীর মোহানায় প্রতাপদিত্যের একটি তুর্গ ছিল। ইহার অধ্যক্ষ ছিলেন প্রতাপের প্রসিদ্ধ সেনানায়ক হায়দার মানক্ল, সেই জন্ত দুর্গের নাম হয় হায়দারগড় । এখনও বুরুজখানা নামে উচ্চ ঢিবি, নিকটস্থ প্রতাপনগর গ্রাম, রাজার খাল, হায়দার আবাদ প্রভৃতি প্রাচীন স্মৃতি বহন করিতেছে। সুন্দরবনের ৫৭ নং লাটে হায়দার আবাদ অবস্থিত। ক্যানিং টাউন হইতে নৌকা বা মোটরলঞ্চযোগে সুন্দরবনের অন্তর্গত স্যার ড্যানিয়েল হ্যামিল্টনের জমিদারী গোসাবায় যাওয়া যায়। প্রত্যহ বেল ১টার সময় ক্যানিং হইতে গোসাবার মোটরলঞ্চ ছাড়ে। সুন্দরবন অঞ্চলে চাষ আবাদ প্রবর্তনের জন্য স্যার ড্যানিয়েল সরকারের নিকট হইতে বহু জমি গ্রহণ করিয়া গোসাবায় একটি আদর্শ কৃষি উপনিবেশ স্থাপন করিয়াছেন। এখানে ভদ্র ও বেকার যুবকগণকে অতি স্থলভে বাসস্থান ও কৃষি কার্য্যের উপযোগী জমি বিলির ব্যবস্থা আছে। স্যার ড্যানিয়েলের প্রচেষ্টায় শ্বাপদ সন্ধুল সুন্দরবনের মধ্যে গোসাবা একটি আদর্শ পল্লীতে পরিণত হইয়াছে। এখানে সাধারণ শিক্ষার সহিত হাতে কলমে কৃষি শিক্ষা দেওয়ার প্রতিষ্ঠান আছে। এখানে সুন্দর পথঘাট নিৰ্ম্মিত হইয়াছে, যৌথ ভাণ্ডার আছে, সুপেয় জলের ব্যবস্থা আছে, উৎপন্ন দ্রব্যের খরিদ বিক্রয়ের জন্য উপযুক্ত বন্দোবস্ত রহিয়াছে। এক কথায় গোসাবাকে একটি আদর্শ ও আধুনিক পল্লী বলা যাইতে পারে। ইহার এলাকার মধ্যে বিনিময়ের জন্ত “গোসাবা নোট” নামক এক প্রকার নোটও প্রচলিত আছে। অতিথি অভ্যাগতগণের থাকিবার জন্য গোসাবায় একটি “গেস্ট হাউস” বা অতিথিশালা আছে। চাংড়িপোতা—কলিকাতা হইঙে ১৩ মাইল দূর। এই গ্রাম সুপ্রসিদ্ধ পুরাতন সংবাদপত্র “সোমপ্রকাশ” সম্পাদক দ্বারকানাথ বিদ্যাভূষণ মহাশয়ের জন্মস্থান। তদীয় সমসাময়িকযুগে দ্বারকানাথ একজন প্রসিদ্ধ মনীষীরূপে পরিচিত ছিলেন। তৎসম্পাদিত “সোমপ্রকাশ” বাংলার শিক্ষিত সমাজে সমাদর লাভ করিয়াছিল । সুরুচিসম্মত প্রণালীতে সংবাদপত্র সম্পাদনে দ্বারকানাথকে অগ্রণী বলা যাইতে পারে। তৎপ্রণীত “ নীতিসার” “রোমের ইতিহাস” “গ্রীসদেশের ইতিবৃত্ত” প্রভৃতি পুস্তক তৎকালে বঙ্গসাহিত্যে খ্যাতিলাভ করিয়াছিল। ১৮৮৬ খৃষ্টাব্দে দ্বারকানাথের মৃত্যু হয়। স্বনামখ্যাত শিবনাথ শাস্ত্রী দ্বারকানাথের ভাগিনেয় ছিলেন । শিবনাথ চাংড়িপোতা গ্রামে মাতুলালয়ে জন্মগ্রহণ করেন। সম্প্রতি দ্বারকানাথের বসতবাটীতে শিবনাথ শাস্ত্রীর একটি স্মৃতি ফলক স্থাপিত হইয়াছে । র-কলিকাতা হইতে ১৪ মাইল দূর। এই স্থানে নাখোদা সম্প্রদায় ভূক্ত মুসলমানগণের একটি দরগাহ আছে। ইহা ফকির আবদুল্লা আত্তাসের দরগাহ নামে পরিচিত। দরগাহের মসজিদটি দেখিতে অতি মুন্দর। ইহার সমীপস্থ একটি কূপের

12a