পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -প্রথম খণ্ড.pdf/২৩২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

३ ९० বাংলায় ভ্রমণ বাগেরহাট হইতে ৬ মাইল দক্ষিণ-পশ্চিমে ধোঁতখালি ও কুমারখালি নামক শাখা নদী পরিবেষ্টিত চকী গ্রাম। স্থানটির অবস্থান বৈশিষ্ট্যের জন্য প্রতাপাদিত্য এখানে একটি দুর্গ নিৰ্মাণ করিয়াছিলেন। এখানকার কাটিকাট হাট প্রসিদ্ধ; মুন্দরবন আবাদের বহু লোক এখানে হাট করিতে আসেন । বাগেরহাট হইতে ৫৬ মাইল দূরে চিরুলিয়া পরগণায় ভৈরব তীরে প্রাচীন গ্রাম পাণিঘাট অবস্থিত। এখানকার অষ্টাদশ ভূজ দেবী মূৰ্ত্তি প্রসিদ্ধ। ক্ষুদ্র মুক্তিটি কঠিন কষ্টি পাথরে প্রস্তুত। কথিত আছে, বরিশাল রায়েরকাটির জমিদার গন্ধৰ্ব্বনারায়ণের কনিষ্ঠ পুত্র রাজচন্দ্র চিরুলিয়া পরগণা প্রাপ্ত হইয়া তথায় বাস করিতে থাকেন; একবার সান্নিপাত জ্বরে তিনি মৃত্যুমুখে পতিত হইলে বৈদ্যেরা কিছু করিয়া উঠিতে পারেন নাই ; একদিন সহসা একজন সন্ন্যাসী আসিয়া মৃতপ্রায় রাজচন্দ্রকে জঙ্গল মধ্যে নদীকূলে লইয়া যাইয়া দীক্ষা দান করেন। পাঁচ বৎসর পরে পুনরায় সন্ন্যাসী রাজচন্দ্রকে একই স্থানে দেখা দেন এবং অন্যান্য মূৰ্ত্তিসহ অষ্টাদশভূজা আদ্যাশক্তির মুক্তি প্রদান করেন। রাজচন্দ্র মন্দির নির্মাণ করাইয়া দেবীর পূজার ব্যবস্থা করেন। ১৭৩৭ খৃষ্টাব্দের পর এই মন্দির নিৰ্ম্মিত হয়। এই দেবী বিশেষ জাগ্ৰত বলিয়া পরিচিত। প্রতি শনি ও মঙ্গলবারে নানা স্থান হইতে এখানে লোকে পূজা দিতে আসে। বাগেরহাট হইতে বাখরগঞ্জ জেলার হুলারহাট পৰ্য্যন্ত প্রতিদিন (রবিবার ভিন্ন) স্টীমার যাতায়াত করে। খুলনা-বরিশাল স্টীমার পথেও হুলারহাট পড়ে। বাগেরহাটহুলারহাট স্টীমার পথে মরেলগঞ্জ একটি বড় স্টেশন ; এই স্থান বাগেরহাট হইতে আড়াই ঘণ্টার পথ। ইহা বাগেরহাট মহকুমার অন্তর্গত সুন্দরবনের মধ্যে পাঙ্গুচি ও বলেশ্বর বা হরিণঘাটা (উপরে যাহা মধুমতী ও গড়াই নামে অভিহিত) নদীর সঙ্গমের আড়াই মাইল উপরে পাঙ্গুচী নদীর কুলে স্থিত। কাছাড় সুন্দরবন স্টীমার পথেও এই স্টেশন পড়ে। ১৮৪৯ খৃষ্টাব্দে ময়েল উপাধিধারী দুইজন ইংরেজ এই স্থানে বসতি স্থাপন করেন, এই জন্ত স্থানটির নাম হয় মরেলগঞ্জ । গভীর নদী এবং স্বাভাবিক অন্য সুবিধার জন্য স্থানটিকে সামুদ্রিক জাহাজের উপযোগী একটি বন্দরে পরিণত করা তাহাদের উদ্দেশ্ব ছিল, ১৮৬৯ খৃষ্টাব্দে বাংলা সরকার ইহাকে বন্দর বলিয়া ঘোষণাও করিয়াছিলেন। কিন্তু ইহা অাশানুরূপ গড়িয়া উঠে নাই ; তবে এখনও সুন্দরবনে একটি ব্যবসায়ের কেন্দ্র হইয়া আছে। খুলনা হইতে স্টীমার পথে প্রসিদ্ধ স্থান সমূহ চাদখালি—খুলনা-সাতক্ষীরা স্টীমার পথে চাদখালি একটি উল্লেখযোগ্য স্থান। খুলনা হইতে স্টীমারে করিয়া চাদখালি যাইতে প্রায় দশ ঘণ্টা সময় লাগে। ইহা কপোতাক্ষী নদীর তীরে অবস্থিত একটি পুরাতন গঞ্জ। পূর্বে ইহা সুন্দরবনের অন্তর্গত ছিল। এখন চাষ আবাদ হওয়ার ফলে সুন্দরবন দূরে সরিয়া গিয়াছে। অষ্টাদশ শতাব্দীর তৃতীয় পাদে যশোহরের তৎকালীন ম্যাজিষ্ট্রেট হেঙ্কেল সাহেব সুন্দরবনে চাব আবাদ প্রবর্তনের জন্য চাদখালিতে একটি বাজার ও একটি সরকারী কাছারি স্থাপন