২৩৪ বাংলায় প্রমণ মন্দির এবং একটি সুন্দর শিব মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। শিব মন্দিরে যে শ্লোক উৎকীর্ণ আছে তাহা হইতে জানা যায় যে মেনাহাতীর মৃত্যুর ১০ বৎসর পরে মন্দিরটি নিৰ্ম্মিত হয়। মন্দির দুটি এখনও বিদ্যমান। রায়গ্রামে রামশঙ্করের বংশীয়গণের বাস আছে। মহম্মদপুর হইতে প্রায় ৬ মাইল উত্তর-পশ্চিমে নবগঙ্গার পশ্চিমকুলে সত্ৰাজিৎপুর একটি প্রসিদ্ধ গ্রাম। খুলনা হইতে মাগুরা পৰ্য্যন্ত যে দৈনিক স্টীমার সাভিস্ আছে, তাহার উপর সত্রাজিৎপুর একটি স্টীমার স্টেশন। শত্রুজিৎ বা সত্রাজিৎ প্রতাপাদিত্যের সমসাময়িক ছিলেন। ইনি বারভূইয়ার অন্ততম ভূষণাধিপতি মুকুন্দরাম রায়ের পুত্র। ইনি মুঘলদিগের অধীনতা স্বীকার করিলেও সুবিধা পাইলেই নিজ ক্ষমতা বাড়াইতে চেষ্ট৷ করিতেন। নবাব ইসলাম খাঁর সাহায্যে ইনি প্রতাপাদিত্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধযাত্রা করিয়াছিলেন বলিয়া কথিত । ইনিই ভূষণ হইতে উঠিয়া আসিয়া যশোহর জেলায় নবগঙ্গাতীরে সত্রাজিৎপুরের প্রতিষ্ঠা করেন এবং তথাকার প্রসিদ্ধ সিংহবংশের ইনি আদি পুরুষ। সত্রাজিৎ মুঘল নবাবদিগকে নানারূপে উত্যক্ত করিয়াছিলেন। কোচবিহার ও কোচহাজোর রাজাদিগের সহিত মুঘলদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিলেন। অবশেষে সম্রাট সাজাহানের সময় ধৃত হইয়া ঢাকায় আন্দাজ ১৬৩৯ খৃষ্টাব্দে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হন। র্তাহার মৃত্যুতে সত্রাজিৎপুরের রাজ-গৌরব ও স্বাধীনতা লুপ্ত হয়। মাদারীপুর—খুলনা হইতে প্রতিদিন প্রসিদ্ধ কুমার-মধুখালী-বিল পথে ফরিদপুর জেলার গোপালগঞ্জ হইয়া মাদারীপুর পর্য্যন্ত স্টীমার যাতায়াত করে। ইহা প্রায় ১৭ ঘণ্টার পথ। মাদারীপুর ফরিদপুর জেলার একটি সদর মহকুমা। বলিতে গেলে এই জেলায় শুধু ফরিদপুর ও মাদারীপুরই শহর পদবাচ্য। একদিকে আড়িয়ল র্থ ও অন্য দিকে কুমার নদ থাকায় শহরটির দৃশ্য অতীব মনোরম। কথিত আছে, শাহ মাদার নামে জনৈক ফকীর এই স্থানে বাস করিতেন বলিয়া ইহার নাম হইয়াছে মাদারীপুর । শাহ মাদারের দরগাহ ও সমাধি শহরের পূর্বদিকে অবস্থিত। হিন্দু মুসলমান উভয় সম্প্রদায়ের লোক ইহাকে শ্রদ্ধা করেন। স্থানীয় বণিকৃগণ সন্ধ্যাদীপ জালিবার সময়ে ভক্তিভরে র্তাহার নাম লইয়া থাকেন। অবস্থানের বৈশিষ্ট্যের জন্য মাদারীপুর একটি প্রসিদ্ধ বাণিজ্যকেন্দ্র হইয়া উঠিয়াছে। পাটের কারবারের জন্য দেশী বিদেশী বহু ব্যবসায়ী এখানে এবং পার্শ্বস্থ চরমুগরিয়াতে অবস্থান করেন এবং চারিদিকে পাটের গুদাম দৃষ্ট হয়। আড়িয়লখার ভাঙ্গনে মাদারীপুর বহুবার ক্ষতিগ্রস্ত হইয়াছে। এক শতাব্দীর কিছু পূৰ্ব্বে, ব্ৰহ্মপুত্রের গঙ্গায় বা পদ্মায় মিলিত হইবার আগে আড়িয়লখার খাত দিয়াই পদ্ম দক্ষিণে সমুদ্রে গিয়া পড়িত। এখন পদ্ম। এ খাত ছাড়িয়া পূৰ্ব্বদিকে সরিয়া গিয়াছে। কবি নবীনচন্দ্র সেন ১৮৭৮ খৃষ্টাব্দে মাদারীপুরে ডেপুটী ম্যাজিষ্ট্রেট হইয়া আগমন করেন। র্তাহার রঙ্গমতী কাব্য এই স্থানেই প্রথম প্রকাশিত হয়। - মাদারীপুরের ঠিক দক্ষিণেই ঘাটমাঝি গ্রাম । বহুকাল পূৰ্ব্বে মেঘা মিঞা নামে এখানে এক জমিদার ছিলেন ; তাহার, কৰ্ম্মচারী রতিরাম র্তাহারই জমিদারীতে একটি তালুক ক্রয় করিলে দুজনের মধ্যে মনোমালিন্ত হয়। জমিদার রতিরামের তালুক ་ལྔ་བ་