পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -প্রথম খণ্ড.pdf/২৪৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

IN-. কৈানও কিছু না থামিয়া এক ভাবে হইতে থাকিলে “কানাই বাড়ীর কীৰ্ত্তনের” সহিত তাহার পূর্ববঙ্গ রেলপথে বাংলাদেশ ১৩৩ তুলনা করা হয়। সীতারামের পতনের পর ভূষণারাজা নাটোর রাজবংশের সম্পত্তিতে পরিণত হয়। নাটোর রাজ কর্তৃক ১৮০০ খৃষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত রামচন্দ্রজী ও শিবের মন্দির মহম্মদপুরের অন্যতম দ্রষ্টব্য। মহম্মদপুর এখন একটি বিরল-বসতি পল্লীগ্রাম মাত্র। ইহার সমৃদ্ধির সময়ে মধুমতী নদী এই স্থানের প্রান্ত দিয়া প্রবাহিত ছিল। বৰ্ত্তমানে নদী প্রায় দুই মাইল দূরে সরিয়া গিয়াছে। ১৮৩৬ খৃষ্টাব্দে এক ভীষণ মহামারীর ফলে মহম্মদপুর একেবারে বিধস্ত হইয়া যায় এবং তাহার পর হইতে ক্রমশঃ ইহা একটি নগণ্য গণ্ডগ্রামে পরিণত হয়। মহম্মদপুরের নিকটস্থ সূৰ্য্যকুণ্ড গ্রামে সীতারামের বংশের তাহার একমাত্র প্রপৌত্র রাধাকান্তের দৌহিত্র বংশের বাস আছে । বাগের হাটের খানজাহান আলির মত সীতারামেরও একদল বেলদার সৈন্য ছিল। কথিত আছে সংখ্যায় ইহারা ২,২০০ ছিল এবং যুদ্ধের সময় ছাড়া অন্য সময়ে জলাশয় খনন করিয়া লোকের জলকষ্ট দূর করাই তাহাদের কাজ ছিল। কথিত আছে, সীতারাম প্রতিদিন নবখনিত জলাশয়ের জলে স্নান করিতেন এবং এই জন্য প্রতিদিন রাজ্যের বিভিন্ন স্থান হইতে রাজধানীতে জল আনা হইত। এইরূপে তিনি বহু পুষ্করিণী প্রতিষ্ঠা করিয়া গিয়াছেন । সীতারামের সৈন্যদলে বহু মুসলমান ছিলেন। কথিত আছে, তিনি মুসলমান সেনাপতিদিগকে ভাই বলিয়া ডাকিতেন এবং হিন্দু মুসলমানের মিলনের জন্য সতত চেষ্টিত ছিলেন। গ্রামা কবিদের গানে ও গাথায় ইহার প্রমাণ আজও পাওয়া যায়। যদুনাথ ভট্টাচাৰ্য্য কুত “ সীতারাম রায়” নামক গ্রন্থ হইতে নিম্নলিখিত কবিতাটি উদ্ধত হইল;— “শুন সবে ভক্তিভাবে করি নিবেদন । দেশ গায়েতে যা হইল শুন দিয়া মন ॥ রাজাদেশে হিন্দু বলে মুসলমানে ভাই । কাজে লড়াই কাটাকাটির নাহিক বালাই ॥ হিন্দু বাড়ীর পিঠে কাশন মুসলমানে খায়। মুসলমানের রস পাটালী হিন্দুর বাড়ী যায়। রাজা বলে আল্লা হরি নহে দুই জন । ভজন পূজন যেমন ইচ্ছা করুক্গে তেমন । মিলে মিশে থাকা সুখ, তাতে বাড়ে বল। ডরেতে পলায় মগ ফিরিঙ্গীরা খল ৷ চুলে ধরে নারী ল’য়ে চড়তে নারে নায় । সীতারামের নাম শুনিয়া পলাইয়া যায় ॥ " মহম্মদপুর হইতে প্রায় ১০ মাইল দক্ষিণে এবং কালুখালি-ভাটিয়াপাড়া শাখা লাইনের ভাটিয়াপাড়া স্টেশনের প্রায় ৫ মাইল পশ্চিমে নবগঙ্গা নদীর তীরে রায়গ্রামে মেনহোতীর কনিষ্ঠ ভ্রাতা রামশঙ্কর নারায়ণ বিগ্রহের জন্য একটি অতি সুন্দর জোড় বাংলা