পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -প্রথম খণ্ড.pdf/৬৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

হাওডা-আমতা ও শিয়াখালা লাইট রেলওয়ে ¢ ጫ জগৎবল্লভপুর—হাওড়াঘাট হইতে ১৭ মাইল দূর। ইহা কাণা নদীর তীরে অবস্থিত। পূৰ্ব্বে ইহা একটি অতি সমৃদ্ধ স্থান ছিল। কাণানদী মজিয়া যাওয়ায় ম্যালেরিয়ার প্রকোপে ইহা এখন ক্রমশঃ ধ্বংসের দিকে যাইতেছে। এখানে যে উচ্চ ইংরেজী বিদ্যালয়টি আছে তাহ কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় স্বষ্টির পূৰ্ব্বে ১৮০৬ খৃষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত । এখানে তাতের কাপড় ও গামছা প্রস্তুত হয় । ইছানগরী—হাওড়াঘাট হইতে ১৮ মাইল দূর । এই স্টেশনের নিকটবৰ্ত্তী ঝিকরা গ্রামে গড়চণ্ডী দেবীর একটি বৃহৎ মন্দির আছে। মন্দিরটি প্রায় দেড় শত বৎসর পূর্বে প্রতিষ্ঠিত। এখানে আরও কতকগুলি প্রাচীন মন্দির ও একটি সুদৃশ্ব ও বৃহৎ মসজিদ আছে । চাপাডাঙ্গা–হাওড়াঘাট হইতে ৩১ মাইল দূর । ইহা হুগলী জেলার একটি প্ৰসিদ্ধ বাণিজ্য কেন্দ্র। এই স্থান হষ্টতে হুগলী জেলার অন্যতম প্ৰসিদ্ধ পল্লী খানাকুলকৃষ্ণনগর ও রাধানগর প্রায় ১২ মাইল দূর। বর্ষাকাল ভিন্ন অন্য সময়ে গো-যানে যাওয়া যায়। বাংলা-নাগপুর রেলপথের কোলাঘাট সটেশন হইতে স্টীমারযোগে রাণীচক হইয়া তথা হইতে নৌকা ও মোটরবাসযোগেও কৃষ্ণনগর ও রাধানগর যাওয়া যায়। খানাকুলকৃষ্ণনগরে বহু শিক্ষিত ও সংস্কৃতজ্ঞ পণ্ডিত ব্যক্তির বাস । এই গ্রামের সবর্বাধিকারী বংশ বিশেষ প্রসিদ্ধ। সংস্কৃত কলেজের ভূতপূৰ্ব্ব অধ্যক্ষ স্বগীয় প্রসন্নকুমার সর্বাধিকারী ও তদীয় কৃতী পুত্র কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভুতপূৰ্ব্ব ভাইস চ্যান্সেলর পরলোকগত ডাঃ দেব প্ৰসাদ সৰ্ব্বাধিকারী ও খ্যাতনামা অস্ত্র চিকিৎসক স্বগীয় ডাঃ সুরেশপ্রসাদ সবর্বাধিকারী এই গ্রামের অধিবাসী ছিলেন । কৃষ্ণনগর গ্রামে গোপীনাথদেবের একটি প্রকাণ্ড মন্দির ও তাহার চতুদিকে আরও অনেকগুলি অপেক্ষাকৃত ক্ষুদ্র মন্দির আছে । কৃষ্ণনগর গ্রামের সংলগ্ন রাধানগর গ্রাম ব্রাহ্ম ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা ও ভারতের বর্তমান যুগের জাতীয়তার প্রধান হোতা রাজা রামমোহন রায়ের জন্মস্থান। ভারতের ভাবধারা ও সংস্কৃতিতে রাজা রামমোহন রায়ের দান অসামান্ত । সাহিত্য, ধৰ্ম্ম, রাজনীতি ও সমাজ সংস্কার প্রভৃতি সকল বিষয়েই র্তাহাকে নবভাবের অগ্রদূত বলা যাইতে পারে। ১৭৭৪ খৃষ্টাব্দের ১০ই মে রাধানগর গ্রামে তাহার জন্ম হয়। র্তাহার পিতার নাম রামকান্ত রায় । এই বংশের কৌলিক উপাধি বন্দ্যোপাধ্যায়। অতি অল্প বয়সে গ্রাম্য পাঠশালার পাঠ সমাপন করিয়া রামমোহন পাটনায় গিয়া আরবী ও ফারসী ভাষায় বুৎপত্তি লাভ করেন। অতঃপর কাশীতে গিয়া তিনি সংস্কৃত শিক্ষা করেন । এই সময়ে তাহার বয়স মাত্র ১৬ বৎসর। দেশে ফিরিয়া রামমোহন পৌত্তলিকতার বিরুদ্ধে প্রচার আরম্ভ করেন। ইহাতে র্তাহার আত্মীয়গণের