পাতা:বাংলার পুরনারী - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/১৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

asਫ ময়মনসিংহে নন্দাইল ষ্টেশন হইতে দশ মাইল দূরে হুলিয়া (বৰ্ত্তমান হলিউড়া ) গ্রামে মানিক চাকলাদার নামে একটি প্ৰতাপশালী ভাগ্যবস্ত লোক বাস করিতেন। সেই অঞ্চলের রাজার অধীনে তিনি বিস্তৃত জমিদারী ভোগ করিতেন। র্তাহার বাড়ীতে উলুছণের ছাউনি এ সুদি-বেতের বেড়াযুক্ত ২০ খানি বাঙ্গলা ঘর ছিল ; সে আমলে অধিকাংশ অবস্থাপন্ন লোকই এরূপ ঘরে বাস করিতেন-পাকা ঘর। নিৰ্ম্মাণের বড় একটা রীতি ছিল না। নদীমাতৃক দেশে পাড় ভাঙ্গার বিপদ আছে, ইষ্টকালয়ে বাস নিরাপদ নহে, এবং অনেক সময় বহুব্যয়ে যাহা নিৰ্ম্মিত হইত। তাহা পাড় ভাঙ্গায় নদী গর্ভে পড়িয়া যাইত । কিন্তু এই সকল উলুছণে নিৰ্ম্মিত গৃহ যেরূপ ব্যয় ও যত্নের সহিত গঠিত হইত, তাহা অনেক সময় পাকা ইমারত অপেক্ষা শুধু অধিক আরামপ্ৰদ ও বাসযোগ্য হইত না, তাহ নিৰ্ম্মাণ করিতেও বহু ব্যয় পড়িত । আইন আকবরিতে বাংলাদেশের এইরূপ ঘরা নিৰ্ম্মাণের কথা আছে,- পাচ হাজার টাকার উপরে এক একখানি ঘরের পাছে ব্যয় হইত, কোন কোন সৌখিন লোক একখানি ঘরের পাছে ২৫/৩০ হাজার টাকা খরচ করিয়া ফেলিতেন। বেতের দ্বারা সে সমস্ত হাঙ্গীর-মুখ, ব্যান্ত্ৰ-মুখ এবং জীব জন্তুর মূৰ্ত্তি রচিত হইয়া চালের কাঠগুলির শোভাবৰ্দ্ধন করা হইত। আভ ও স্ফটিকের স্তম্ভে কত বিচিত্র কারুকাৰ্য্য প্ৰদৰ্শিত হইত। ঢাকার মসলিন ও সোনারূপার কাজ যেরূপ অতুলনীয় ছিল, এই খড়েঘরগুলিও সেইরূপ বাঙ্গালী কারিগরের অপূর্ব দক্ষতার নিদর্শন স্বরূপ পল্লীতে পল্লীতে শোভা পাইত । চাকলাদারের বাড়ীর ঘরগুলি বেত ও ছণে নিৰ্ম্মিত বলিয়া উপেক্ষনীয় ছিল না। র্তাহার বাড়ীতে বহু লোকজন খাটিত। দশটি হাতী এবং