পাতা:বাংলার পুরনারী - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/১৯৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

SS বাংলার পুরনারী এই স্বর্ণ-প্ৰতিমাকে সমাজের দিক দিয়া এমন কি নিজের স্বগণের দিক দিয়া, কুল-শীল-মান-ধৰ্ম্ম এ সকলের দিক দিয়া বিচার করিলে তাহা অবিচার হইবে। একটি মাত্ৰ মানদণ্ডে তাহার বিচার হইতে পারে, তাহা শুধু অমিশ্র ও বিশুদ্ধ প্রেমের মাপকাঠি। সে দিক দিয়া সে একবারে নিখুত, একটি চরম আদর্শ। বাঙ্গালা দেশ, যেখানে চৈতন্য জন্মগ্ৰহণ করিয়াছিলেন-সেখানে যে প্রেমের সর্বোচ্চ আদর্শ খেলিয়াছে, তাহা । অন্যত্ৰ সুদুর্লভ। কাঞ্চনের জোড়া অন্য কোন দেশের সাহিত্যে অাছে কিনা, ऊांश दक्लिड १iांत्रि ना । একালে যাহারা যুদ্ধজয় করে, পরকে হত্যা করিবার নানা বৈজ্ঞানিক অভিসন্ধি উদ্ভাবন করে, যুদ্ধে আহতদিগের শুশ্ৰষা করে, তাহদেরই টি টি নাম । কাঞ্চনের মত আত্মত্যাগের চিত্ৰ—এখন যবনিকার অন্তরালে । কিন্তু হয়ত দু্যলোকে ভুলোকে প্রচুর রক্তবর্ষণের পর-মানুষের রক্তপিপাসা যখন মিটিয়া যাইবে,-যখন পুনরায় দয়ামায়া ত্যাগ প্ৰভৃতি মহৎ গুণের জন্য আত্মা লালায়িত হইবে, তখন বঙ্গদেশের এই প্রেমের আদর্শগুলি দরে বিকাইবে, জগতের চিত্রশালায় শ্রেষ্ঠ নর-নারীদের পংক্তিতে আসন গ্ৰহণ করিবে। তখন একটী নিঃস্বাৰ্থ অশ্রুর দাম গুণবেত্তার নিকট দশটি “ফটি পাউণ্ডার” অপেক্ষা অধিক আদরের জিনিষ হইবে। গল্পগুলি খুব সংক্ষিপ্ত। পল্লীকবিরা বাজে কথা জানে না, যেটুকু বলা দরকার, তাহার অতিরিক্ত কথা দ্বারা তাহারা গল্প পল্লবিত করে না । তমসা গাজির যে ছবি কবি দুই একটী রেখায় অ্যাকিয়াছেন—তাহা কেমন জীবন্ত ! সেকালের বাণিজ্য, মেয়েদের গহনা, খেলার জিনিষ, এমন কি পল্লীবাসিরা মধুর চাক ভাঙ্গিয়া, তাহা কি আনন্দে খাইত, তাহার বর্ণনা কি চমৎকার! যে দেশে নারিকেল জানা নাই, তাহারা সেই গাছ দেখিয়া এবং তাহার মাথার উপর ফলে জলের সঞ্চার দেখিয়া কিরূপ আনন্দিত হয়—যে দেশে বাথানে মহিষ চরিয়া বেড়ায় এবং পাহাড়ের গাত্ৰ-নিঃসৃত ছড়া হইতে বড় বড় চোখ বিস্তার করিয়া হরিণ জল পান করে, যে দেশে ধান ভাঙ্গিয়া চাউল করিয়া উত্তর দেশ হইতে শত শত বৃহৎ ডিঙ্গি দক্ষিণ দেশের উপত্যকায় চলাফেরা করে-সেই সকল দেশের কথা-কবি চিত্রকরের মত দুই একটী