পাতা:বাংলার পুরনারী - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৪৩৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মাণিকতারা veSye যদি একশ শত্ৰু আমার কাছে দাড়ায় ও আমার হাতে তীর-ধনুক থাকে, তবে সেই একশ লোককে আমি হাঁটাইয়া দিতে পারি।” বাসু নিঃশ্বাস ফেলিয়া ভাবিল “এমন স্ত্রী যদি আমার সঙ্গী হয়, তবে আমি রাজা হইয়া সিংহাসনে বসিতে পারি।” স্বামীর মনের কষ্ট কিন্তু মাণিকতারা দেখিতে পায়, তাহার স্বামী যেন সর্বদা বসিয়া বসিয়া কি ভাবে । সে কাছে গেলে তাহার দিকে চাহিতে লজ্জা পায় ; কি যেন একটা গোপন ব্যথা সে ঢাকিয়া রাখিতে চেষ্টা করে, তাহার পূর্বের প্রফুল্লভাব আর নাই, এমন কি তাহারও সঙ্গ ছাড়িয়া সে একলা থাকিতে ভালবাসে। মাণিকতারা ভাবিয়া পায় না। তাহার স্বামীর কি হইয়াছে, অথচ সে নিজে না বলিলে উপযাচিক হইয়া তাহার মনের কথা জিজ্ঞাসা করিতে সে সঙ্কোচ বোধ করে। অথচ স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে যদি একটা সরল ভাব না থাকে-তবে দাম্পত্য জীবন সুখের হয় না । মাণিকতারা ভাবিয়া ভাবিয়া কৃশ হইয়া গেল । কিন্তু একদিন সে মরিয়া হইয়া স্বামীর কাছে উপস্থিত হইয়া জিজ্ঞাসা করিল-“তোমার সোণামুখের এরূপ বিবৰ্ণতা আমি আর সন্থ করিতে পারিতেছি না । বল, তোমার কি হইয়াছে ? আমাকে দেখিয়া তুমি পলাইয়া ফের কেন ; এভাবে কি সংসারের শান্তি থাকিতে পারে ? বলত প্ৰাণের স্বামী ; তোমার কি হইয়াছে, তোমার পায়ে যদি কুশ-কণ্টক বিধে তাহা উঠাইয়া ফেলিতে আমি যে প্ৰাণ পৰ্য্যন্ত দিতে পারি, তাহা কি তুমি জাম না ?” বলিতে বলিতে মাণিকতারা আসিয়া বাসুর হাত দুটি ধরিয়া সজল চোখে মিনতির সুরে বলিল,