পাতা:বাংলার পুরনারী - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৫০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Soyo বাংলার পুরনারী না, বাংলার প্রাচীন লেখকেরাও সেইরূপ অবাস্তব ও অপ্ৰাকৃত কথা দিয়া যে সকল বিষয়ের অবতারণা করে তাহ অচিরাৎ বাস্তব জগতের কথায় পরিণত করিয়া খাটি বস্তব-রস দ্বারা তাহা জীবন্ত করিয়া তোলে । এই দুইটি কাহিনীতেও এই কথার প্রমাণ পাওয়া যায়। আরম্ভে কাজল রেখা কতকগুলি অলৌকিক কথার একটা রহস্যের মত আবিভূতি হইল । সে নাকি পিতার সংসারে থাকিলে সংসারের সর্বনাশ হইবে, তাহাকে মৃত স্বামীর সহিত বিবাহ দিতে হইবে। এই অসম্ভব অপ্ৰাকৃত ঘটনার মধ্যে তাহার আবির্ভাবের পরিকল্পনা এবং ইহার ভবিষ্যৎ বাণী করিলেন একটা বনের পাখী । সেই পাখীর কথায় একান্ত নির্ভরপরায়ণ ধনেশ্বর সাধু তাহার হৃদয়ের মণি-মাণিক্যের হারের মত দুলালী কন্যাকে নিঃসহায়ভাবে ভীষণ জঙ্গলে একটা শবের পার্শ্বে রাখিয়া গৃহে প্ৰত্যাগমন করিলেন । অলৌকিকতার উপর এইখানেই একরূপ তৎসময়ের জন্য যবনিকা পড়িল এবং তাহার পরে কল্পনার অদৃশ্য সলিল-তল হইতে জন্মিলেন সত্যকার কাজলরেখা । যে সকল কল্পনার আবর্জনার মধ্যে র্তাহার জন্ম। এবার তাহার কোন চিহ্ন ভঁাহার মধ্যে নাই-তিনি একান্তভাবে রমণীকুল-লাঞ্ছন দেবী মূৰ্ত্তি, র্তাহার অমলধবল রূপের মধ্যে আবর্জনা বা কৰ্দমের লেশ নাইতিনি পুনঃ পুনঃ অতি কঠোর পরীক্ষার সম্মুখীন হইতেছেন এবং সোনাকে পুনঃ পুনঃ কষিলে যেরূপ তাহার রূপ আরও ফুটিয়া উঠে, সেইরূপ সেই সকল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হইয়া তিনি উজ্জ্বলতর হইয়া দেবী প্ৰতিমা হইয়া উঠিলেন । কঙ্কণ দাসীর চক্রান্তে, যিনি হইবেন রাজরাণী তিনি দাসী হইলেন। এত বড় বিড়ম্বনা সহ্য করিয়াও তিনি চুপ করিয়া রহিলেন, তিনি বুঝিলেন, র্তাহার প্রতি দৈব বিরুদ্ধ-ইহার প্রতিকূলে দাড়াইলে তিনি জয়ী হইতে পরিবেন না। অনেক নির্দোষী লোকে বিচারালয়ে ফাসি কাষ্ঠে বুলিয়া থাকে, এবং খুনী নির্দোষী হইয়া মুক্তি পায়। এইজন্য মহাপুরুষ বলিয়াছিলেন যখন বুঝিবে, তুমি অদৃষ্টের ফেরে পড়িয়াছ, তখন গায়ের জোরে অদৃষ্টকে ঠেকাইতে যাইও না, resist no evil, কাজল তঁাহার হাতের কঙ্কণ দ্বারা ক্রীত দাসীর হাতে কত লাঞ্ছনা পাইতেছেন, কিন্তু সক্রেটিসের মত