পাতা:বাংলা বানানের নিয়ম (তৃতীয় সংস্করণ) - কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়.pdf/১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

[ ৬ ]

ণ ন

 অ-সংস্কৃত শব্দে কেবল ন হইবে, যথা—‘কান, সোনা, বামুন, কোরান, করোনার’। কিন্তু যুক্তাক্ষর ণ্ট, ণ্ঠ, ণ্ড, ণ্ঢ চলিবে, যথা— ‘ঘুণ্টি, লণ্ঠন, ঠাণ্ডা’।

 ‘রানী’ স্থানে বিকল্পে ‘রাণী’ চলিতে পারিবে।

৮। ও-কার ও ঊর্ধ্ব কমা প্রভৃতি

 সুপ্রচলিত শব্দের উচ্চারণ, উৎপত্তি বা অর্থের ভেদ বুঝাইবার জন্য অতিরিক্ত ও-কার, ঊর্ধ্ব কমা বা অন্য চিহ্ন যোগ যথাসম্ভব বর্জনীয়। যদি অর্থগ্রহণে বাধা হয় তবে কয়েকটি শব্দে অন্ত্য অক্ষরে ও-কার এবং আদ্য বা মধ্য অক্ষরে ঊর্ধ্ব কমা বিকল্পে দেওয়া যাইতে পারে, যথা—‘কাল, কালো; ভাল, ভালো; মত, মতো, পড়ো, প’ড়ো (পড়ুয়া বা পতিত)’।

 এই সকল বানান বিধেয়- ‘এত, কত, যত, তত; তো, হয়তো; কাল (সময়, কলা), চাল (চাউল, ছাত, গতি), ডাল (দাইল, শাখা)।

৯। ং ঙ

 ‘বাঙ্গলা, বাঙ্গালা, বাঙ্গালী, ভাঙ্গন’ প্রভৃতি এবং ‘বাংলা, বাঙলা, বাঙালী, ভাঙন’ প্রভৃতি উভয়প্রকার বানানই চলিবে। হসন্ত ধ্বনি হইলে বিকল্পে ং বা ঙ বিধেয়, যথা—‘রং, রঙ; সং, সঙ: বাংলা, বাঙলা’। স্বরাশ্রিত হইলে ঙ বিধেয়, যথা- ‘রঙের, বাঙালী, ভাঙন’।

ং ও ঙ-র প্রাচীন উচ্চারণ যাহাই হউক, আধুনিক বাংলা উচ্চারণ সমান, সেজন্য অনুস্বার স্থানে বিকল্পে ঙ লিখিলে আপত্তির কারণ নাই। ‘রং-এর’ অপেক্ষা ‘রঙের লেখা সহজ। ‘রঙ্গের লিখিলে অভীষ্ট উচ্চারণ আসিবে না, কারণ ‘রঙ্গ’ ও ‘রং'-এর উচ্চারণ সমান নয়, কিন্তু ‘রং’ ও ‘রঙ’ সমান।

১০। শ ষ স

 মূল সংস্কৃত শব্দ-অনুসারে তদ্ভব শব্দে শ, ষ বা স হইবে, যথা— ‘আঁশ (অংশ্য), আঁষ (আমিষ), শাঁস (শস্য), মশা (মশক), পিসী (পিতৃঃস্বসা)। কিন্তু কতকগুলি শব্দে ব্যতিক্রম হইবে, যথা— ‘মিন্‌সে’ (মনুষ্য), ‘সাধ’ (শ্রদ্ধা)।

 বিদেশী শব্দে মূল উচ্চারণ-অনুসারে s স্থানে স, sh স্থানে শ হইবে, যথা— ‘আসল, ক্লাস, খাস, জিনিস, পুলিস, পেনসিল, মসলা, মাসুল, সবুজ, সাদা, সিমেণ্ট, খুশি, চশমা, তক্তাপোশ,