পাতা:বাংলা বানানের নিয়ম (তৃতীয় সংস্করণ) - কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়.pdf/১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

[ ৭ ]

পশম, পোশাক, পালিশ, পেনশন, শখ, শৌখিন, শয়তান, শরবৎ, শরম, শহর, শার্ট, শেক্‌স্পিয়র। কিন্তু কতকগুলি শব্দে ব্যতিক্রম হইবে, যথা— ইস্তাহার ((ইশ্‌তিহার), গোমস্তা (গুমাশতাহ্‌), ভিস্তি (বিহিশ্‌তী), খ্রীষ্ট (Christ)’।

 শ ষ স এই তিন বর্ণের একটি বা দুইটি বর্জন করিলে বাংলা উচ্চারণে বাধা হয় না, বরং বানান সরল হয়। কিন্তু অধিকাংশ তদ্‌ভব শব্দে মূল-অনুসারে শ ষ স প্রয়োগ বহুপ্রচলিত, এবং একই শব্দের বিভিন্ন বানান প্রায় দেখা যায় না। এই রীতির সহসা পরিবর্তন বাঞ্ছনীয় নয়। বহু বিদেশী শব্দের প্রচলিত বাংলা বানানে মূল-অনুসারে শ বা স লেখা হয়, কিন্তু কতকগুলি শব্দে ব্যতিক্রম বা বিভিন্ন বানান দেখা যায়, যথা—‘সরবৎ, সরম; শহর, সহর; শয়তান, সয়তান; পুলিস, পুলিশ’। সামঞ্জস্যের জন্য যথাসম্ভব একই নিয়ম গ্রহণীয়।

 বিদেশী শব্দের s-ধ্বনির জন্য বাংলায় ছ অক্ষর বর্জনীয়। কিন্তু যেখানে প্রচলিত বাংলা বানানে ছ আছে এবং উচ্চারণেও ছ হয়, সেখানে প্রচলিত বানানই বজায় থাকিবে, যথা— ‘কেচ্ছা, ছয়লাপ, তছনছ, পছন্দ’।

 দেশজ বা অজ্ঞাতমূল শব্দের প্রচলিত বানান হইবে, যথা—‘করিস, ফরসা, (ফরশা), সরেস (সরেশ), উসখুস (উশখুশ)’।

১১। ক্রিয়াপদ

 সাধু ও চলিত প্রয়োগে দম্ভ রূপে ‘করান, পাঠান’ প্রভৃতি অথবা বিকল্পে ‘করানো, পাঠানো’ প্রভৃতি বিধেয়।

 চলিত ভাষার ক্রিয়াপদের বিহিত বানানের কয়েকটি উদাহরণ দেওয়া হইল। বিকল্পে ঊর্ধ্বকমা বর্জন করা যাইতে পারে, এবং -লাম বিভক্তি স্থানে -লুম বা -লেম লেখা যাইতে পারে।

হ-ধাতু

 হয়, হন, হও, হ’স, হই। হচ্ছে। হয়েছে। হ’ক, হ’ন, হও, হ। হ’ল, হ’লাম। হ’ত। হচ্ছিল। হয়েছিল। হব (হবো), হবে। হ’য়ো, হ’স। হ’তে হ’য়ে, হলে, হবার, হওয়া।

খা-ধাতু

 খায়, খান, খাও, খাস, খাই। খাচ্ছে। খেয়েছে। খাক, খান, খাও, খা। খেলে, খেলাম। খেত। খাচ্ছিল। খেয়েছিল। খাব (খাবো), খাবে। খেয়ো, খাস। খেতে, খেয়ে, খেলে, খাবার, খাওয়া।