পাতা:বাংলা বানানের নিয়ম (তৃতীয় সংস্করণ) - কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়.pdf/৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

[ ৪ ]

কর্তৃক প্রকাশিত পুস্তকাদিতে নিয়মাবলী-সম্মত বানান গৃহীত হইলে ক্রমে ক্রমে তাহা সুপ্রচলিত হইবে। কিন্তু সাধারণের অভ্যস্ত হইতে সময় লাগিবে এবং ছাত্রগণও প্রথম প্রথম নিয়ম লঙ্ঘন করিবে। সেজন্য এখন কয়েক বৎসর বানানের নিয়ম-পালন-সম্বন্ধে কোনও প্রকার পীড়ন বাঞ্ছনীয় নয়।

সংস্কৃত বা তৎসম শব্দ

১। রেফের পর ব্যঞ্জনবর্ণের দ্বিত্ব

 রেফের পর ব্যঞ্জনবর্ণের দ্বিত্ব হইবে না, যথা—‘অর্চনা, মূর্ছা, অর্জুন, কর্তা, কার্তিক, বার্তা, কর্দম, অর্ধ, বার্ধক্য, কর্ম, কার্য, সর্ব’।

 সংস্কৃত ব্যাকরণ-অনুসারে রেফের পর দ্বিত্ব বিকল্পে সিদ্ধ; না করিলে দোষ হয় না, বরং লেখা ও ছাপা সহজ হয়।

২। সন্ধিতে ঙ্‌ স্থানে অনুস্বার

 যদি ক খ গ ঘ পরে থাকে তবে পদের অন্তস্থিত ম্ স্থানে অনুস্বার অথবা বিকল্পে বিধেয়, যথা—‘অহংকার, ভয়ংকর, শুভংকর, সংখ্যা, সংগম, হৃদয়ংগম, সংঘটন’ অথবা ‘অহঙ্কার, ভয়ঙ্কর’ ইত্যাদি।

 সংস্কৃত ব্যাকরণের নিয়ম-অনুসারে বর্গীয় বর্ণ পরে থাকিলে পদের অন্তস্থিত ম্ স্থানে অনুস্বার বা পরবর্তী বর্গের পঞ্চম বর্ণ হয়, যথা— ‘সংজাত, স্বয়ংভূ’ অথবা ‘সঞ্জাত, স্বয়ম্ভূ’। বাংলায় সর্বত্র এই নিয়ম-অনুসারে ং দিলে উচ্চারণে বাধিতে পারে, কিন্তু ক-বর্গের পূর্বে অনুস্বার ব্যবহার করিলে বাধিবে না, বরং বানান সহজ হইবে।

অ-সংস্কৃত অর্থাৎ তদ্‌ভব, দেশজ ও বিদেশী শব্দ

৩। রেফের পর ব্যঞ্জনবর্ণের দ্বিত্ব

 রেফের পর ব্যঞ্জনবর্গের দ্বিত্ব হইবে না, যথা—‘কর্জ, শর্ত, পর্দা, সর্দার, চরি, ফর্মা, জার্মানি’।

৪। হস্‌-চিহ্ন

 শব্দের শেষে সাধারণতঃ হস্-চিহ্ন দেওয়া হইবে না, যথা—‘ওস্তাদ, কংগ্রেস, চেক, জঙ্গ, টন, টি-পট, ট্রাম, ডিশ, তছনছ, পকেট, মক্তব, হক, করিলেন, করিস’। কিন্তু যদি ভুল