পাতা:বাংলা লিরিকের গোড়ার কথা.pdf/৫১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ংলা লিরিকের গোড়ার কথা 8 * এসব কবিতায় রাধা-কৃষ্ণের নাম আছে বটে, কিন্তু তারা কাব্যজগতে ঠিক স্বর্গের দেবতা নন, অনেকটা মতলোকের মানুষেরই মতো । তাদেরও সুখ-দুঃখ আছে, আশা-আকাঙ্ক্ষা আছে, মান-অভিমান আছে, এমনকি লজ্জা ভয় ঈর্ষাও আছে। পৃথিবীর সব দেশেরই কাব্যে দেবতারা মানুষেরই মতো, এবং ঠিক এই কারণেই তারা আমাদের এত আপনার জন । শুধু আধ্যাত্মিকতাই যদি তাদের একমাত্র সম্বল হত তা হলে তারা আমাদের এত প্রিয় হতেন কি না সন্দেহ । ভাষায় লেখা এইসব প্রাচীন কবিতা পড়ে যদি কারোর মনে ধর্মভাবের উদয় হয়, তা হলে তাতে কিছু যায় আসে না । কিন্তু এই কবিতাগুলিকে নিছক কবিতা বলেই মেনে নিলে বোধ হয় তাদের প্রতি সদ্বিচার করা হবে । কেবল দেখার বিষয় এইটুকু যে, এগুলোর ভিতর কাব্যের ধ্বনি আছে কি না, আর সেই ধ্বনি মানুষকে এই দৃশুমান জগতের উর্ধ্বে নিয়ে যেতে পারে কি না, তা সে যতই ক্ষণিকের তরে হোক না কেন । মুসলমানী আমলের থেকে বাংলা ভাষায় সঙ্গীতপ্রাণ লিরিকের যে-ধারা একবার শুরু হয়ে গেল, আজ প্রায় ছ শো বছর ধরে সে-ধারা অক্ষুন্ন হয়ে আছে । সে-ধারা কখনো ক্ষীণভাবে কখনো স্ফীত অবস্থায় প্রবাহিত হয়ে আমাদেরই সময়ের কিছু পূর্বে রবীন্দ্রনাথের হাতে এসে পৌছল। র্তার হাতে পড়ে বাংলা লিরিক এমন-এক ছাপ পেয়ে গেল যে, সে-ধারা আর কখনো লুপ্ত হয়ে যাবে সে-আশঙ্কা এখন নেই। যতদিন বঙ্গদেশ থাকবে, যতদিন বাংলা ভাষা জীবিত আছে, ততদিন বাংলা লিরিকও প্রাণবস্ত হয়ে থাকবে । তবে আমাদের স্বদেশী আমলে বাংলা লিরিক যে ঠিক কী রূপ নেবে, তার বিচারের সময় এখনো উপস্থিত হয় নি। সে-বিচারের ভার আমার পরবর্তীদের উপরই রইল। উপসংহারে বহুদিনগত সেই অতীতকালের দুটি অপূর্ব বর্ষার গানের