পাতা:বাংলা শব্দতত্ত্ব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর -দ্বিতীয় সংস্করণ.pdf/১৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভাষার ইঙ্গিত S. c (t. তুকতাকের তাক, ঘুষ অর্থও তুকু অর্থকে কল্পনাক্ষেত্রে অনেকখানি বাড়াইয়া দিল অথচ স্পষ্ট কিছুই বলিল না । কিন্তু যেখানে মূল শব্দে আকার আছে সেখানে দোসর শব্দে এ নিয়ম থাটে না, পুনৰ্ব্বার আকার যোগ করিলে কথাটা দ্বিগুণিত হইয়া পড়ে। কিন্তু দ্বিগুণিত করিলে তাহার অর্থ অন্য রকম হইয়া, যায়। যদি বলি গোলগোল, তাহাতে, হয়, একাধিক গোল পদার্থকে বুঝায়, নয়, প্রায়-গোল জিনিষকে বুঝায়। কিন্তু গোলগাল বলিলে গোল আকৃতি বুঝায় সেই সঙ্গেই পরিপুষ্টত প্রভৃতি আরো কিছু অনির্দিষ্ট ভাব মনে আনিয়া দেয়। এই জন্য এই প্রকার অনির্দিষ্ট ব্যঞ্জনার স্থলে দ্বিগুণিত করা চলে ন, বিকৃতির প্রয়োজন । তাই গোড়ায় যেখানে আকার আছে সেখানে দোসর শব্দে অন্য স্বরবর্ণের প্রয়োজন । তাহার দৃষ্টান্ত — দগদোগ, ডাকডোক, বাছবোছ, সাজসোজ, ছাটছোট, চালচোল, ধারধোর, সাফসোফ । অন্যরকমঃ–কাটাকোটা, খাটাখোটা, ডাকাডোকা, ঢাকাঢোকা, ধ্যাটাঘোটা, ছাটাছোট, ঝাড়াঝোড়া, চাপাচোপা, ঠাসাঠোসা, কালোকোলো । এইগুলির রূপান্তর –কাটাকুটি, ডাকাডুকি, ঢাকাচুকি, ঘাটাঘুটি, ছাটাছুটি, কাড়াকুড়ি, ছাড়াছড়ি, ঝাড়াবুড়ি, ভাজাভুজি, তাড়াতুড়ি, টানাটুনি, চাপাচুপি, ঠাসাঠুসি। এইগুলি ক্রিয়াপদ হইতে উৎপন্ন । বিশেষ্যপদ হইতে উৎপন্ন শব্দ –কাটাকুঁটি, ঠাট্টাঠটি, ধাক্কাধুকি ।