পাতা:বাঙলা সাহিত্য পরিচয়-তারকনাথ গঙ্গোপাধ্যায়.pdf/৭৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ৰুখিগুয়া নাগে করিল হাতের তাড়। কলুজিয়া নাগে কজল শোভে ভাল ॥ নীল নাগে দেবী বান্দিল কেশপাশ । : অঞ্জনিয়া নাগে করে অঞ্জন বিলাস ॥ রচনা কাল জানিতে পারা যায় না এরূপ আর একজন প্রাচীন কৰি হইতেছেন নরায়ণদেব। ইনি মৈমনসিংহ জেলার কিশোরগঞ্জের বোরগ্রাম নামক গ্রামের অধিবাসী। ইহার পূর্বপুরুষ রাঢ়ের অধিবাসী ছিলেন এবং মুসলমানগণ বঙ্গদেশ আক্রমণ করিলে পূর্ববঙ্গে চলিয় যান। রচনা দেখিয়া মনে হয় যে, ইনি ১৫শ শতাব্দীর শেষ ভাগে আবির্ভূত হইয়াছিলেন এবং কবিত্বে ও পাণ্ডিত্যে সকলের প্রিয় হইয়াছিলেন। আসামের অধিবাসিগণ এই কবিকে তাহদের দেশবাসী বলিয়া দাবী করেন এবং অসমীয়া ভাষায় তাহার রচিত কাব্যের নিদর্শন দেখাইয়t १ॉ८कन ! রচনা কাল সম্পূর্ণরূপে সঠিক নির্ধারিত করিতে না পারিলেও পারিপার্থিক প্রমাণের বলে কিয়ুৎ পরিমাণে আয়িত্বের মধ্যে আনা যায় পূর্ববঙ্গের জনপ্রিয় কবি বিজয়গুপ্তের পদ্মাপুরাণের এক-একটি পুথিতে রচনাকাল 氰氨 একত্রক রূপ আছে বটে, কিন্তু কাব্যের মধ্যে হুসেন সঙ্গের রাজ্যশাসনের সময় কবির আবির্ভাব ও কাব্য রচনার উল্লেখ থাকায় উহাকে ১৪১৬ শকাব্দ অর্থাৎ ১৪৯৭ খ্ৰীষ্টাৰ বলিয়া ধরা যাইতে পারে। পরবর্তীকালের কবি এবং গায়কদের সংশোধন এবং সংযোজনের ফলে বিজয়গুপ্তের কাব্যের আদি ও অকৃত্রিম রূপ এখন আর পাইবার উপায় নাই। তবে তাহার কাব্যের যেটুকু পরিচয় পাওয়া গিয়াছে তাহা হইতে বুঝিতে পারা যায় যে তিনি কবি অপেক্ষা পণ্ডিত হিসাবেই বড় ছিলেন । মনসামঙ্গলের কাহিনীটি-ই মর্মস্পর্শ ; ইহাকে করুণ করিয়া বর্ণনা করার জম্বই বিজয়গুপ্ত জনপ্রিয় হইতে পারিয়াছিলেন। তবে তাহার কাব্যে কয়েকটি প্রবাদ বাক্য দেখা যায় :– অতি কোপে করিলে কাজ ঠেকে অথান্তর। অতি বড় গাঙ্গ হইলে ঝাটে পড়ে চর ॥ যেই মুখে কণ্টক বসে সেই মুখে খসে । বচনে সাগর বান্ধ পথ বহি ছলে ॥ ডোকর হারাইয় যেন ডোকরে বাঘিনী ॥ পাতিল জুখিয়া যেন কুমারে গড়ে সরা। বিজয়গুপ্তের কাব্যে আর একটি লক্ষ্যণীয় আছে। কবি যে ছন্দ-বৈচিত্র্য