পাতা:বাঙলা সাহিত্য পরিচয়-তারকনাথ গঙ্গোপাধ্যায়.pdf/৯৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রায় সমস্তই মার্কণ্ডের চণ্ডীর ভাবানুবাদ। ১৬৬৪-৬৫ খৃষ্টাব্দে রচিত ভবানীপ্রসাদ রায়ের দুর্গামঙ্গল এই শ্রেণীর একখানি কাব্য ; ইহাতে রামচন্দ্রর অকাল বোধনের কাহিনী বর্ণিত হইয়াছে। দ্বিজ কমললোচনের চণ্ডিকাবিজয় এবং রূপনারায়ণ ঘোষের দুর্গামঙ্গল কাব্য পাওয়া গিয়াছে। রামচন্দ্র মুখোপাধ্যায়ের দুর্গামঙ্গল বৃহদাকার কাব্য ; ইগর পালা দুই ভাগে বিভক্ত –(১) গৌরীবিলাস ও কঙ্কালীয় অভিশাপ ; (২) নলদময়ন্তী। গৌরীবিলাস মহাকবি কালিদাসের কুমারসম্ভবের অ সভাবে লিখিত এবং নলদগ্নয়ন্তী শ্রীচর্যের নৈষধ চরিত অবলম্বনে রচিত। রামচন্দ্র প্রকৃতপক্ষে কবি ছিলেন, ইহা তাহার রচনা পড়িলে মনে হয় । লক্ষ্মীর মাহাত্ম্য প্রচারক কাহিনীকে দুইভাগে ভাগ করা যায় –পাচালি ও ব্ৰতকথা । প্রথম শ্রেণীর কাব্যের মধ্যে গুণরাজখ। শিবানন্দ কর রচিত লক্ষ্মীমঙ্গল বা কমলামঙ্গল কাব্য প্রাচীনতম । ব্ৰতকথার মধ্যে বসন্ত, ধনঞ্জয়, যাদবদাস, কিঙ্কর, জগমোহন মিত্র, রঞ্জি ত রামদাস, ভরত পণ্ডিত, মহেশচন্দ্র দাস, বিপ্ৰ যাদবানন্দ প্রভৃতির রচনা পাওয়া গিয়াছে । ! স্বর্যের মাহাত্ম্য প্রচারক মঙ্গলকাব্য রচবিতাগণের মধ্যে রামজীবন বিদ্যাভূষণের ও দ্বিজ কালিদাসের সূর্যের পাচালী উল্লেখযোগ্য। চাটিগ্রামের লক্ষ্মণ কবির কাব্য ও ও প্রচলিত ছিল । সরস্বতীর মাহাত্ম্য-প্রচারক সারদামঙ্গল কাব্য কয়েকটি পাওয়া গিয়াছে । দয়ারাম এবং দ্বিজ বীরেশ্বরের কাব্যই ইহাদের মধ্যে অধিক প্রচলিত ছিল। অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষার্দ্ধে সুসঙ্গেব রাজা রাজসিংহ মহাকবি কালিদাসের বর লাভের কাহিনী বর্ণনা করিয়া ভারতী-মঙ্গল কাব্য রচনা করিয়াছিলেন । শিবচন্দ্র সেনের সারদামঙ্গলে রামায়ণের কাহিনীরই পুনরাবৃত্তি করা হইয়াছে। - কালিকামঙ্গল এবং রায়মঙ্গল কবি কৃষ্ণরাম ষষ্ঠীমঙ্গলের আদি কবি । তাহার কাব্যে বর্ণিত হইয়াছে যে ষষ্ঠদেবী নিজ পূজা আদায় করিতে বৃদ্ধ ব্রাহ্মণীর বেশে সপ্তগ্রামের রাজা শত্রুজিতের রাণীর নিকট উপস্থিত হইয়া ষষ্ঠীপূজার মাহাত্ম্য বিবৃত করিলেন। ষষ্ঠীর বরে সায়বেণের স্ত্রী সাত পুত্র লাভ করিয়াছিল। কনিষ্ঠ পুত্রের স্ত্রী একদিন ষষ্ঠীর নৈবেদ্য থাইয়া ফেলিয়া শাশুড়ীকে বলিল যে একটি কাল বিড়ালে, উহা খাইয়া গিয়াছে। কাল বিড়াল ষষ্ঠীর বাহন। এই বধু পুত্র সস্তান প্রসব করিলে কাল বিড়ালে তাহা অপহরণ করিল ; এইভাবে ছয়টি পুত্র অপহৃত হইলে বধু বনে গিয়া প্রসব করিল এবং পুত্রকে কোলে লইয়া বসিয়া রহিল। কিন্তু. সেখানে তাহার একটু তন্দ্রবেশ হইলেই বিড়ালে পুনবায় শিশু অপহরণ করিল। বধু জাগিয়া উঠিয়াই বিড়ালের পিছনে ছুটিল, কিন্তু হুচোট খাইয়া পড়িয়া গিয়া, br@。