হইতে হাওয়াই দ্বীপে দুইহাজার মাইল পথ একটানা উড়িয়া হাজির হয়।
একই প্রকারের পাখী একই সঙ্গে যাত্রা করে না। দলে দলে এরা রওনা হয়, কেহ আগে, কেহ পরে। এই দলগুলি সব সময় পারিবারিক দল হয় না। বিভিন্ন পরিবার একত্র হইয়া চলে। সব সময় যে জনকজননী পুত্রকন্যাদের সঙ্গে লইয়া আসে তাহাও নহে।
যাযাবর পাখীদের অনেকে রাত্রেই ভ্রমণ করে, দিনের বেলা ভূমিতে অবতরণ করিয়া ক্ষুন্নিবৃত্তি করে এবং বিশ্রাম করিয়া লয়। কতকগুলি আবার দিনেও ভ্রমণ করে। হাঁসকে রাত্রেই উড়িয়া যাইতে শোনা যায়। কতকগুলি পাখী রাত্রে উড়িয়া চলিবার সময় কণ্ঠধ্বনি করিতে করিতে চলে। বিহার প্রদেশে বাসকালে বহু রাত্রে হংসের কলকণ্ঠধ্বনি শয্যায় শায়িত অবস্থায় গভীর রাত্রে শ্রবণ করিয়া নিদ্রার আবেশে মনে হইয়াছে যেন কোনও স্বপ্নপুরী হইতে নৃত্যপরায়ণা অপ্সরীর নুপুরশিঞ্জিনী কানে ভাসিয়া আসিতেছে।
আর একটা কৌতুককর ব্যাপার এই যে বারবার পাখী একই স্থানে ফিরিয়া আসিয়া থাকে। আপনার ঘরের পাশে যে খঞ্জনদম্পতি সহসা আবির্ভূত হইয়া পুচ্ছনৃত্যে আপনাকে অভিবাদন করে, সে পূর্ব্ববৎসরও সেইখানেই হয়তো আসিয়াছিল—আবার পরবৎসরও আসিবে।
ফ্লামিঙ্গো পাখীকে দিনের বেলা পথ চলিতে দেখিয়াছি। একদিন সকাল আন্দাজ ৮টার সময় ওয়াল্টেয়ারে সমুদ্রতীরে উপস্থিত হইয়া দেখি এক ঝাঁক ফ্লামিঙ্গো বলাকার মত সমুদ্রজলের ১০।১২ হাত উপর দিয়া দক্ষিণদিকে উড়িয়া চলিয়াছে। তীর হইতে তাহারা অর্দ্ধমাইল মাত্র দূরে ছিল। তাহারা সোজা সমুদ্রের উপর দিয়া উড়িয়া গেল। তীরের দিকে আসিতে দেখিলাম না।