পাতা:বাঙ্গলা ব্যাকরণ.djvu/৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সমুষ্যের যে, পশু-শ্রেষ্ঠত্ব সে বিদ্যা-নিমিত্ত ; এবং তাহার যে এত ক্ষমতা ও ঐশ্বর্ঘ্য তাহাও এই বিদ্যা-হেতু। সঙ্ক্ষেপতঃ, বিদ্যাই মানদের লোচন ও সুখের সাধন ;-অবিদ্যা দুঃখের কারণ। বিদ্যোপার্জন নিমিত্তই প্রায় মনুষ্যজন্ম ; বিদ্যাবিতরণ শ্রেষ্ঠ কৰ্ম্ম । বিদ্যার প্রচার ও স্বচ্ছন্দে লোকযাত্রা ব্যাপার নির্বাহ ভাষাদ্বার ব্যতীর্ত হয় না। পরন্তু কোন দেশে বিদ্যার সাধারণ সঞ্চালন তদেশীয় ভাষা ভিন্ন অন্য ভাষায় হইতে পারেনা । ইংরাজেরা যে দেশ হইতে যে বিদ্যা বা শাস্ত্র গ্রহণ করিয়াছেন তাহা যদি সেই ভাষায় দেশে প্রকাশ করিতে চেষ্টা করিতেন, তবে কি এত লোক ঐ সকল বিদ্যায় বিদ্যাবন্ত হইতে পারিতেন! পক্ষান্তরে, যদি সংস্কৃতজ্ঞ মহোদয়ের ঔদার্য্যপূর্বক সংস্কৃতে লিখিত শাস্ত্রসমূহ দেশে চলিত ভাষায় অমুবাদ করিতেন, তবে কি এত বাঙ্গালি অশাস্ত্রজ্ঞ থাকিত ? ন শাস্ত্রজ্ঞান আমাদের এত কৃচ্ছ্বসাধ্য ও এত লোকের অসাধ্য হইত ? কিন্তু তাহারা অনুবাদ করিবেন কি স্বকীয় ভাষাকে ভাষা বলিয়াই হেয়ঞ্জান করেন। এ বিবেচনা হয় না যে অনর্থকরী ভাষাভ্যাস কেবল তাহাতে লিখিত শাস্ত্র জ্ঞান নিমিত্ত; অতএব সেই ভাষা শিখিতেই যদি বয়স গেল তবে রিষয়ি লোক তৎপরে কিপ্রকারে শাস্ত্রাভ্যাস করিতে পারে? আর যদি মাতৃভাষায় ঐ শাস্ত্রজ্ঞান হইতে পারে তবে অব্যবসায়ি বিষয়ির ভিন্ন ভাষাভ্যাসে শরীরক্ষয়ের অবশ্যক কি ?/শীলণর(আমাদের মধ্যে)ষণহারা বিজাতীয় ভাষা পড়েন, ও তাহাতে বিদ্যাভ্যাস করেন,তাহদের অনেকের দেশভাষার প্রতি বিজাতীয় বিদ্বেষ। আমরা অনেকে অল্প শ্রমসাধ্য অথচ সৰ্ব্বসাধারণের উপকারি যে দেশভাষ| তাহার আলোচনায় যত্ন নাকরিয়া অত্যায়াসে অন্যভাষাভ্যাস করত মহাযত্নে তাহারি অালোচনা করি, এবং কষ্টসৃষ্টে দুই এক খান গ্রন্থও রচনা করি; কিন্তু ঐ শ্রমে দেশভাষায় কোন উকারক বিষয় লিখিলে যে কত উত্তম ও তাহাতে দেশের কত উপকণর হইত এ পরিদেবনা হয় না। এবং রচনাকালে ইহাও বিবেচনা হয় না যে অন; ভাষা আমাদের স্বাভাবিক নয়, আমরা সহস্ৰ যত্ন করিলেও সংস্কৃত মাত্র ভাষি প্রাচীনের ন্যায় স্কুললিত সংস্কৃত, দিল্লীবালির ন্যায় উদু, মোগলের মত পারগীও ইংরাজবং ইংবাজী রচিতে পারি না, তবে কে ঐ সকল ভাষায় আমাদের রচনাকে তাদৃশ্ব আদর করিবে ? প্রত্যুত, তৎপাঠে ভদেশীয় কত • লোক উপহাস না করিয়৷ থাকিতে পারিবে? বিদেশীয় ভাষাভ্যালে চিরকাল শ্রম করিলেও চিরকাল তদেশীয়