পাতা:বাঙ্গালার ইতিহাস প্রথম ভাগ (রাখাল দাস বন্দোপাধ্যায়).djvu/৩২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩০২
বাঙ্গালার ইতিহাস।

মানের বংশজাত। মদনপাল গৌড়নগর হইতে বিজয়সেন কর্ত্তৃক তাড়িত হইলে মানবংশীয় নরপতিগণ সম্ভবতঃ স্বাধীনতা ঘোষণা করিয়াছিলেন। এই সময়ে গয়ার শাসন-কর্ত্তা বিশ্বাদিত্যের পুত্র যক্ষপালের শীতলা মন্দিরের শিলালিপিতেও কোন পালবংশীয় রাজার নাম নাই। গোবিন্দপুরে আবিষ্কৃত গঙ্গাধরের কুলপ্রশস্তিতে এবং গয়ার শীতলা দেবী মন্দিরে আবিষ্কৃত যক্ষপালের শিলালিপিতে রুদ্রমান এবং যক্ষপাল[১] নরেন্দ্র আখ্যায় অভিহিত হইয়াছেন। কোন্ সময়ে মানবংশীয় রাজগণের বা যক্ষপালের বংশধরগণের অধিকার লুপ্ত হইয়াছিল তাহা নির্দ্দিষ্ট হয় নাই।

 ভোজবর্ম্মদেবের বেলাব তাম্রশাসন হইতে অবগত হওয়া যে, যদুবংশে বীরশ্রী এবং হরি বহুবার প্রত্যক্ষবৎ দৃষ্ট হইয়াছিলেন[২]। এই স্থানে প্রশস্তিকার ইঙ্গিতে জানাইয়াছেন যে, যাদব-বর্ম্মবংশে হরিবর্ম্ম নামে একজন রাজা জন্মগ্রহণ করিয়াছিলেন। হরিবর্ম্ম নামক একজন রাজার অস্তিত্ব সম্বন্ধে অনেকগুলি প্রমাণ আবিষ্কৃত হইয়াছে। একখানি শিলালিপি, একখানি তাম্রশাসন এবং দুইখানি হস্তলিখিত গ্রন্থ হইতে হরিবর্ম্মদেবের অস্তিত্বের কথা অবগত হওয়া যায়। শিলালিপিখানি উড়িষ্যা প্রদেশের পুরী জেলায় ভুবনেশ্বর গ্রামে অনন্তবাসুদেব-মন্দির-প্রাঙ্গণে আবিষ্কৃত হইয়াছিল, ইহা এক্ষণে অনন্তবাসুদেব-মন্দিরের প্রাচীরগাত্রে সংলগ্ন আছে। ইহা হরিবর্ম্মদেবের মন্ত্রী ভবদেবভট্টের কুলপ্রশস্তি। ইহা হইতে অবগত হওয়া যায় যে, সাবর্ণগোত্রীয় রাঢ়প্রদেশের

  1. Indian Antiquary, Vol. XVI, 1887, p. 65, V. 10.
  2. সোপি প্রাপ যদুং ততঃ ক্ষিতি (ভু)-জাং বংশোয়মুজ্জৃম্ভতে।
    বীরশ্রীশ্চহরিশ্চ যত্র বদ্ভ(হু)শঃ প্রত্যক্ষমেবৈক্ষ্যত॥
    —Journal of the Asiatic Society of Bengal, New Series, Vol. X, pp. 126-7.