পাতা:বাঙ্গালার ইতিহাস প্রথম ভাগ (রাখাল দাস বন্দোপাধ্যায়).djvu/৩২৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দশম পরিচ্ছেদ।
৩০৩

সিদ্ধল গ্রামবাসী শ্রোত্রীয়বংশে প্রথম ভবদেবভট্ট জন্মগ্রহণ করিয়াছিলেন। তিনি গৌড়েশ্বরের নিকট হইতে হস্তিনীভিট্ট গ্রাম প্রাপ্ত হইয়াছিলেন। ভবদেবের বৃদ্ধ প্রপৌত্র আদিদেব বঙ্গরাজের মহামন্ত্রী-মহাপাত্র-মহাসান্ধিবিগ্রহিক ছিলেন। আদিদেবের পৌত্র ‘বালবলভীভুজঙ্গ’ উপাধিধারী ভবদেবভট্ট দীর্ঘকাল হরিবর্ম্মদেবের মন্ত্রী ছিলেন এবং তাঁহার পরে তাঁহার পুত্রেরও উপদেশদাতা ছিলেন। দ্বিতীয় ভবদেভট্ট রাঢ় দেশে একটি জলাশয় খনন করাইয়াছিলেন এবং ভুবনেশ্বরে নারায়ণ, অনন্ত ও নরসিংহমূর্ত্তি প্রতিষ্ঠা করাইয়াছিলেন[১]। এই শিলালিপি সম্পাদনকালে স্বর্গীয় ডাক্তার কিলহর্ণ বলিয়াছিলেন যে, অক্ষরের আকার দেখিয়া ইহাকে ১২০০ খৃষ্টাব্দের শিলালিপি বলিয়া বোধ হয়[২]। এই উক্তির উপরে নির্ভর করিয়া শ্রীযুক্ত রমাপ্রসাদ চন্দ বলিয়াছেন, “কিলহর্ণ-কথিত ঠিকঠাক ১২০০ খৃষ্টাব্দ ভট্টভবদেবের প্রশস্তির কাল না হইলেও, অক্ষরের হিসাবে হরিবর্ম্মার তাম্রশাসন এবং ভবদেবের প্রশস্তি দ্বাদশ শতাব্দীর পূর্ব্বে ঠেলিয়া লওয়া যায় না[৩]। বিগত চতুর্দ্দশ বর্ষের মধ্যে আর্য্যাবর্ত্তের উত্তর-পূর্ব্বার্দ্ধে বহু নূতন খোদিতলিপি আবিষ্কৃত হইয়াছে, বহু রাজ-বংশের কাল নির্ণীত হইয়াছে এবং ইতিহাসের বহু পরিবর্ত্তন হইয়াছে। প্রাচীন ভারতীয় অক্ষর-তত্ত্বের আলোচনাকালে এখন আর বুলার অথবা কিলহর্ণের নাম গ্রহণ করিয়া তাঁহাদিগের অতি প্রাচীন সিদ্ধান্তগুলি প্রমাণরূপে গ্রহণ করিলে চলিবে না। শিলালিপির সহিত শিলালিপি এবং তাম্রশাসনের সহিত তাম্রশাসনের তুলনা করিয়া দেখিলেই স্পষ্ট বুঝিতে পারা যায় যে, বিহারে আবিষ্কৃত রামপালের দ্বিতীয় এবং দ্বিচত্বারিংশ

  1. Epigraphia Indica, Vol. V, pp. 205-7.
  2. Ibid, p. 205.
  3. গৌড়রাজমালা, পৃঃ ৫৬, পাদটীকা।