সারনাথের শিলালিপি ও দামোদরপুরের তাম্রলিপি আবিষ্কারের পূর্ব্বে ডাক্তার স্মিথ প্রমুখ ঐতিহাসিকগণ অনুমান করিতেন যে নরসিংহগুপ্ত মালবরাজ যশোধর্ম্মদেবের সহিত মিলিত হইয়া উত্তরাপথে হূণ-সাম্রাজ্য ধ্বংস করিয়াছিলেন[১]। তাঁহাদিগের এই বিশ্বাসের মূল চীনদেশীয় পরিব্রাজক হিউয়েন-থ্সং বা ইউয়ান-চোয়াংএর উক্তি। চৈনিক পরিব্রাজক লিপিবদ্ধ করিয়া গিয়াছেন যে, মগধরাজ বালাদিত্য হূণরাজ মিহিরকুলকে পরাজিত করিয়াছিলেন[২]। এই মগধরাজ বালাদিত্য যে পুরগুপ্তের পুত্র নরসিংহগুপ্ত বালাদিত্য, এই মত সর্ব্ব প্রথমে ডাক্তার হর্ণলি কর্ত্তৃক প্রবর্ত্তিত হইয়াছিল কিন্তু পরে তিনি এই মত প্রত্যাহার করিয়াছিলেন[৩]। ১৯১৪ খৃষ্টাব্দে শ্রীযুক্ত জন্ আলানও এই মত গ্রহণ করিতে পারেন নাই[৪]। সারনাথের শিলালিপি আবিষ্কৃত হওয়ায় প্রমাণ হইতেছে যে এই মত একেবারে অগ্রাহ্য। নরসিংহগুপ্তের পুত্র দ্বিতীয় কুমারগুপ্ত যখন ১৫৪ গৌপ্তাব্দে (৪৭২-৭৩ খৃঃ অব্দ) সিংহাসনে অধিষ্ঠিত ছিলেন, তখন ইহা নিশ্চয় যে তাঁহার পিতা নরসিংহগুপ্ত এই তারিখের পূর্ব্বে দেহত্যাগ করিয়াছিলেন। মালবরাজ যশোধর্ম্মদেব এই সময়ের ষষ্টিবৰ্ষ পরে মালবের সিংহাসনে অধিষ্ঠিত ছিলেন[৫]। তাঁহার একটিমাত্র শিলালিপিতে তারিখ পাওয়া গিয়াছে। এই তারিখ বিক্রম সম্বৎসর ৫৮৯ (৫৩৩ খৃঃ অব্দ)[৬] সুতরাং তিনি নরসিংহগুপ্তের দেহত্যাগের ৬১ বৎসর পরে জীবিত
পাতা:বাঙ্গালার ইতিহাস প্রথম ভাগ (রাখাল দাস বন্দোপাধ্যায়).djvu/৯৪
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭৪
বাঙ্গালার ইতিহাস।