পাতা:বাঙ্গালার ইতিহাস (রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়) দ্বিতীয় খন্ড.djvu/১২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8 বাঙ্গালীর ইতিহাস গোঁড়াভিযানের বিস্তৃত বিবরণ নাই। তবকাৎ-ই-নাসিরীতে তাহ আছে এবং এই বিবরণ অধিকাংশ স্থলেই সত্য। ' 跨 গোঁড় বিজয়ের চত্বারিংশদ বর্ষ পরে, তবকাৎ-ই-নাসিরী প্রণেতা মৌলানামিনহাজ-উস্-সিরাজ আবু-ওমর-ওসমান জুর্জাণী, গৌড়-দেশে লক্ষ্মণাবতী নগরে আসিয়া, সমৃসামূ-উদ্দীন নামক বখতিয়ার খিলজির জনৈক প্রাচীন সৈনিকের সাক্ষাং পাইয়াছিলেন । মগধ এবং সম্ভবতঃ গৌড় বিজয়ের বিবরণ সমৃসামূ-উদ্দীনের উক্তির উপরে নির্ভর করিয়া লিখিত। সেই বিবরণ দেখিলে স্পষ্ট উপলব্ধি হয় যে, মগধ তখন অরক্ষিত, অরাজক ; প্রাচীন মগধে তখন মাংস্কন্যায়ের সম্পূর্ণ_প্রভাব। সেই জন্যই প্রাচীন চরণাদ্রিদুর্গের অধিকারী, তুরুস্ক জাতীয় বখতিয়ার সামান্য সেনা লইয়া মগধের নানাস্থান লুণ্ঠন করিতে ভরসা করিয়াছিলেন । পাল ও সেনবংশীয় রাজগণ মগধের অধিকারের জন্য দীর্ঘকাল যুদ্ধবিগ্রহে লিপ্ত ছিলেন, সেই সময়ে সীমান্ত অরক্ষিত দেখিয়া বখতিয়ার মগধের নানাস্থান লুণ্ঠন করিতেন। মগধ-লুণ্ঠন লব্ধ অর্থে সেনা সংগ্ৰহ করিয়া, তিনি অবশেষে উদগুপুরের প্রাচীন সঙ্ঘারাম অধিকার করিয়াছিলেন । বিজেতা মুসলমানের নিকট গিরিশীর্ষে অবস্থিত দেবমন্দির ও ভিক্ষুগণের আবাস দুর্গবং প্রতীয়মান হইয়াছিল । সেন ও পালরাজবংশের তখন এমন শক্তি ছিল না যে, লুণ্ঠনলোলুপ দসু্যর অত্যাচারে বাধা প্রদান করেন। তবকাৎ-ই-নাসিরীতে দেখিতে পাওয়া যায় যে, কেহ কখনও লুণ্ঠনতৎপর তুরুষ্ক সেনাকে বাধা প্রদান করেন নাই। উদগুপুরের সঙ্ঘারাম আক্রান্ত হইলে, মুষ্টিমেয় সেনার সাহায্যে মগধরাজের পক্ষে আত্মরক্ষা অসম্ভব দেখিয়া বৌদ্ধ ভিক্ষুগণ আত্মরক্ষার্থ অস্ত্র ধারণ করিয়াছিলেন । উদগুপুর অধিকৃত হইল, বিক্রমশিলা অধিকৃত হইল, মগধ মুসলমানের করকবলিত হইল, গোবিন্দপালের রাজ্য বিনষ্ট হইল, তখন সেন রাজা কি করিতেছিলেন ? ১১৭০ ও ১১৯৩ খৃষ্টাব্দে গয়ানগরী সেনরাজগণের অধিকার-- ভূক্ত ছিল । মগধরাজ্য বখতিয়ার খিলজি কর্তৃক অধিকৃত হইলে, সেনরাজ ¢f তবকৎ-ই-নাসিরী, ইংরাজী অনুবাদ, পৃঃ ৫২। (৫) বাঙ্গালার ইতিহাস, প্রথম ভাগ, পৃঃ ৩২০-২১ । (•) Indiam Antiquary, vol. IV, pp. 366-67. (৭) বাঙ্গালার ইতিহাস, প্রথম ভাগ, পৃঃ ৩১৫।