পাতা:বাঙ্গালার ইতিহাস (রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়) দ্বিতীয় খন্ড.djvu/৩৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

९by বাঙ্গালার ইতিহাস সুলতান কুতব-উদ্দীন ইবক আলীমর্দান খিলজিকে লক্ষ্মণাবতীর শাসনকর্তা নিযুক্ত করিয়াছিলেন। বাবা সফাহানীর সাহায্যে কারাগার হইতে পলায়ন করিয়া আলীমৰ্দ্দান সুলতান কুতব -উদ্দীনের নিকট গমন করিয়াছিলেন এবং তাহার সহিত গজনী গিয়াছিলেন। সেই স্থানে তিনি তুর্কীদিগের হস্তে বন্দী হইয়াছিলেন। গজনী হইতে ফিরিয়া আসিলে তিনি কুতব-উদ্দীনের আদেশে লক্ষ্মণাবতীতে প্রেরিত হইয়াছিলেন। দেবকোটের অধিকারী হস্যম্-উদ্দীন ইউয়জ, তাহাকে অভ্যর্থনা করিবার জন্য অগ্রসর হইয়া আসিয়াছিলেন । দেবকোটে উপস্থিত হইয়া অালীমৰ্দ্দান লক্ষ্মণাবতীর শাসন ভার লইয়াছিলেন। সুলতান কুতব-উদ্দীন ইবকের মৃত্যুর পরে আলীমৰ্দ্দান স্বাধীনতা অবলম্বন করিয়া সুলতান আলাউদ্দীন নাম গ্রহণ করিয়াছিলেন এবং চারিদিকে সৈন্য প্রেরণ করিয়া বহু খলজ আমীরকে নিহত করিয়াছিলেন । রাজোপাধি গ্রহণ করিয়া আলাউদ্দীন আলীমর্দান অহঙ্কারে উন্মত্তপ্রায় হইয়া উঠিয়াছিলেন। তিনি ক্ষুদ্র গৌড়ের অংশমাত্র ক্ষুদ্রতর লক্ষ্মণাবতীর অধিকার লাভ করিয়া তাহার অধিকার বহির্ভূত এবং অধিকার হইতে বহুদূরে অবস্থিত খোরাসান, ইরাক, গজনী, গোর ও ইসফাহানের অধিকার প্রত্যর্থিগণকে প্রদান করিতেন । যদি কেহ বলিত যে এই সকল স্থান তাহার অধিকার বহির্ভূতি, তাহা হইলে তিনি বলিতেন যে, শীঘ্রই উহা অধিকার করিয়া দিব । আলীমৰ্দ্দান অত্যন্ত অত্যাচারী ছিলেন, তাহার আদেশে বহু নরহত্যা হইয়াছিল এবং দরিদ্র ও দুৰ্ব্বল ব্যক্তি সমূহ দুর্দশার চরম সীমায় উপনীত হইয়াছিল । অত্যাচার অসহ্য হইয়া উঠিলে একদল খলজ, আমীর ষড়যন্ত্র করিয়া আলীমৰ্দ্দানকে হত্যা করিল এবং হস্যম্-উদ্দীন ইউয়জ-কে লক্ষ্মণাবতীর শাসন ভার প্রদান করিল। আলীমৰ্দ্দান কিঞ্চিদধিক দুই বৎসর কাল লক্ষ্মণাবতী শাসন করিয়াছিলেন ১ । বখতিয়ারের পরে, যে কয়জন খলজত আফগান, লক্ষ্মণাবতীর অধিকার প্রাপ্ত হইয়াছিলেন ; তাহাদিগের মধ্যে কেবল আলীমৰ্দ্দান খিলজিই দিল্লীর সুলতানের নিকট হইতে শাসনকর্তৃপদ লাভ করিয়াছিলেন ; কারণ মহম্মদ বখতিয়ার নিজ ভূজবলে লক্ষ্মণাবতী অধিকার করিয়াছিলেন এবং মহম্মদ ৭ ও হস্যম্-উদ্দীন ইউয়জ, খলজ, আমীরগণের সাহায্যে লক্ষ্মণাবতীর (৫৯) তবকাৎ-ই-নাসিরী, ইংরাজি অনুবাদ, পৃঃ ৫৭৬–৮০।