পাতা:বাঙ্গালীর প্রতিভা ও সুভাষচন্দ্র - মহেন্দ্রনাথ গুহ.pdf/১০৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বাঙ্গালীর প্রতিভা ও সুভাষচন্দ্র
৯৬

দায়িত্ব গ্রহণ করে। কেবল গৃহকর্ম্মে লিপ্ত থাকাই স্ত্রীলোকের একমাত্র কর্ত্তব্য নহে, পরন্তু পুরুষগণের সহিত পাশাপাশি দাঁড়াইয়া যুদ্ধ করিতে করিতে জীবন বিসর্জ্জন করাও তাহাদের অবশ্য কর্ত্তব্য। যেহেতু স্বাধীনতার সুখ পুরুষ ও স্ত্রী উভয়েই ভোগ করিবে। সুতরাং এই সংগ্রামে যোগদান করিতে হইলে শারীরিক যোগ্যতা ও কঠোর শিক্ষার একান্ত প্রয়োজন। আমাদের দেশ অশিক্ষিতের দেশ—স্ত্রীলোকগণ আপনাপন শুভাশুভ বুঝিতে পারেন না। একবার যদি তাঁহাদিগকে বুঝাইয়া দেওয়া যায়, তাহা হইলে তাঁহারা দেশের জন্য জীবন বিসর্জ্জন দিতে কখনও পশ্চাৎপদ হইবেন না। ভারতে এমন দিনও ছিল যখন মাতা ও ভগিনীগণ তাঁহাদের পুত্র ও ভ্রাতৃগণকে রণসাজে সজ্জিত করিয়া হাসিমুখে যুদ্ধক্ষেত্রে পাঠাইয়া দিতেন। যে শক্তিতে অনুপ্রাণিত হইয়া মাতৃজাতি পুরুষ জাতিকে এইরূপ উৎসাহিত করিতেন, সে শক্তি বর্ত্তমানে সুপ্ত অবস্থায় আছে। তাহাকে জাগ্রত করাই এই নারীবাহিনীর উদ্দেশ্য। কারণ ‘বীরমাতাই কেবল বীরসন্তান প্রসব করিতে পারে।’ ঝাঁসীর রাণী এইরূপ একজন আদর্শ বীর রমণী ছিলেন। সুতরাং তাঁহার নামানুসারে এই বাহিনীর নামকরণ হইয়াছিল। নেতাজীর প্রতিষ্ঠিত নারীবাহিনীর অধিনায়িকা ডাক্তার লক্ষীবাইও ঝাঁসীর রাণীর ন্যায় তেজস্বিনী রমণী। ইঁহার অনন্যসাধারণ ব্যক্তিত্ব এই নারীবাহিনীর প্রত্যেক রমণীর চিত্ত জয় করিয়াছিল। সকলেই তাঁহাকে অশেষ শ্রদ্ধা ও ভক্তি করিত।