পাতা:বিচিত্রা (প্রথম বর্ষ দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/১৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

-উপন্যাস R O রেলগাড়ি হাওড়ায় পৌছল, বেলা তখন চারটি হবে। ওড়নায়া-চাদরে গ্ৰন্থি-বদ্ধ হ’য়ে বর-কনে গিয়ে বসল। ব্রুহাম গাড়িতে। কলকাতার দিবালোকের অসংখ্য চক্ষু, তার সামনে কুমুর দেহমান সঙ্কুচিত হয়ে রইলো। যে-একটি অতিশয় শুচিন্তাবোধ এই উনিশ বছরের কুমারীজীবনে ওর অঙ্গে অঙ্গে গভীর ক’রে ব্যাপ্ত, সেটাকে, কর্ণের সহজ কবীচের মতো, কেমন ক’রে ও হঠাৎ ছিন্ন ক’রে ফেলবে ? এমন মন্ত্র আছে যে-মন্ত্রে এই কবচ এক নিমেষে। আপনি খ”সে যায় । কিন্তু সে মন্ত্র হৃদয়ের মধ্যে এখনো তো বেজে ওঠেনি। পাশে যে-মানুষটি ব’সে আছে মনের ভিতরে সে তো আজো বাইরের লোক । আপনি লোক হবার পক্ষে তার দিক থেকে কেবল তো বাধাই এসেচে। তার ভাবে ব্যবহারে যে-একটা রূঢ়তা সে যে কুমুকে এখনো পৰ্য্যন্ত কেবলি ঠেলে ঠেলে দুরে ঠেকিয়ে রাখলো। এদিকে মধুসূদনের পক্ষে কুমু একটি নূতন আবিষ্কার। স্ত্রী জাতির পরিচয় পায় এ পৰ্য্যন্ত এমন অবকাশ এই কেজো BBBDS S BDDD SDDDSS LY S S YYYBBDYS SDBBDD মধ্যে পণ্য-নারীর ছোওয়াও ওকে কখনো লাগেনি। কোনো স্ত্রী ওর মনকে কখনো বিচলিত করেনি এ কথা সত্য নয়, কিন্তু ভূমিকম্প পৰ্যন্তই ঘটেছে-ইমারাৎ জখম হয় নি। মধুসুদন মেয়েদের অতি সংক্ষেপে দেখেচে ঘরের বৌবিদের মধ্যে । তারা ঘরকায়ার কাজ করে, কেঁাদল করে, কানাকানি করে, অতি তুচ্ছ কারণে কান্নাকাটিও ক’রে -बीब्रदौठलनाथ दून থাকে। মধুসূদনের জীবনে এদের সংস্রব নিতান্তই যৎসামান্য। ওর স্ত্রীও যে জগতের সেই অকিঞ্চিৎকর বিভাগে স্থান পাবে, এবং দৈনিক গাৰ্হস্থ্যের তুচ্ছতায় ছায়াচ্ছন্ন হ’য়ে প্ৰাচীরের আড়ালে কৰ্ত্তাদের কটাক্ষ চালিত মেয়েলি জীবনযাত্রা অতিবাহিত করবে। এর বেশি সে কিছুই ভাবেনি। স্ত্রীর সঙ্গে ব্যবহার করবারও যে একটা কলানৈপুণ্য আছে, তার মধ্যেও যে পাওয়া বা হারানোর একটা কঠিন সমস্যা থাকৃতে পারে, এ কথা তার হিসাবদক্ষ সতর্ক মস্তিষ্কের এক কোণেও স্থান পায়নি ; বনস্পতির নিজের পক্ষে প্ৰজাপতি যেমন বাহুল্য, অথচ প্ৰজাপতির সংসৰ্গ যেমন তাকে মেনে নিতে হয় ভাবী স্ত্রীকেও মধুসুদন তেমনি ক’রেই ভেবেছিল। এমন সময়ে বিবাহের পরে সে কুমুকে প্ৰথম দেখলে। এক রকমের সৌন্দৰ্য্য আছে তাকে মনে হয় যেন একটা দৈব আবির্ভাব, পৃথিবীর সাধারণ ঘটনার চেয়ে অসাধারণ পরিমাণে বেশি,-প্ৰতিক্ষণেই যেন সে প্ৰত্যাশার অতীত। কুমুর সৌন্দৰ্য্যু সেই শ্রেণীর। ও যেন ভোরের শুক তারার মতো, রাত্রের জগৎ থেকে স্বতন্ত্র, প্ৰভাতের জগতের ওপারে। মধুসুদন তার অবচেতন মনে নিজের অগোচরে কুমুকে একরকম অস্পষ্টভাবে নিজের চেয়ে শ্রেষ্ঠ বোধ করলে-অন্তত একটা ভাবনা উঠলো। এর সঙ্গে কি রকম ভাবে ব্যবহার করা চাই, কোন কথা কেমন ক’রে বললে সঙ্গত হবে। কি ব’লে আলাপ আরম্ভ করবে ভাবতে ভাবতে মধুৰ সুদন হঠাৎ এক সময়ে কুমুকে জিজ্ঞাসা করলে, “এদিক থেকে রোঙ্গুর আসছে, না ।”