পাতা:বিচিত্রা (প্রথম বর্ষ দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৬৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

লণ্ডনের সঙ্গে আমার শুভদৃষ্টি হলো গোধূলি লগ্নে। হ’তে না হ’তেই সে চক্ষু নত ক’রে আঁধারের ঘোমটা টেনে দিলে। প্ৰথম পরিচয়ের কুমার-বিস্ময় গোড়াতেই ব্যাহত হ’য়ে যখন অধীর হ’য়ে উঠল তখন মনকে বোঝালুম, এখন এ তো আমারি। আবরণ এর দিনে দিনে খুলিব। পরের দিন সকালে উঠে দেখি আকাশ কলের ধোঁয়ায় মুখ কালো ক’রে ছিচকোদুনে ছেলের মতো যখন তখন চোখের জল ঝরাচ্ছে। সূৰ্য্যদেবের ঠিক-ঠিকানা নেই। সম্ভবতঃ তিনি কঁাদুনেটাকে ক্ষেপিয়ে দিয়ে মাষ্টারের ভয়ে দুষ্ট ছেলের মতো ফেরার হয়েছেন। লণ্ডনের চিমনীওয়ালা বাড়ীগুলো চুরুটখোরদের মতো মুখ দিয়ে ধোঁয়া ছাড়তে ছাড়াতে আকাশের দিকে চেয়ে হাসছে, আর যে-দু’চারটে গাছপালার বহু কষ্টে সাক্ষাৎ পাওয়া যায়। তারা আমাদের অসুৰ্য্যাম্পশুদের মতো চিকের আড়ালে দাড়িয়ে পাতা খসখস করতে কুরুতে হতভাগ্য আকাশটার দিকে ছলছল চোখে তাকাচ্ছে। ক্রমে জানলুম। এইটেই এখানকার সরকারি আবরণ হাওয়া । মাঝে মাঝে এর নিপাতন হয়, গ্রীষ্মকালে এর ব্যতিক্রম হয়, কিন্তু সারা শীতকালটা নাকি এমনি চলে। কদাচি কোনোদিন আকাশে উঠোন নিকিয়ে নিৰ্ম্মল করা হ’লে রূপালী সুৰ্য উঠে ধূমলা নগরীকে বলে, গুডমৰ্ণিং। অমনি ঘরে ঘরে খবর রটে, পথে পথে পখিক দেখা দেয়, -শ্ৰীঅন্নদাশঙ্কর রায় চেনামুখ চেনামুখকে বলে, “হাও লাভ লী! আজি সারাদিন যদি এমনি থাকে- ” মুখের কথা মুখ থেকে না মিলাতেই সুৰ্য্য বলে, এখন আসি,-বৃষ্টি বলে, এবার নামি-দু-একদল পথিক ভাবে ছাতা না এনে কি বোকামি করেছি, আরেকদল পথিক ভাবে ভাগ্যে রেনকোটখানা সঙ্গে ছিল। êerics: weather gift খোসমেজাজী যে খবরের কাগজওয়ালারা প্ৰতিদিন তার ভাবী চালের খবর নেয় ও কাগজের সর্বপ্রথম পৃষ্ঠার সর্বোচে ছেপে দেয়-কাল বাতাস প্ৰথমে পশ্চিম থেকে ও পরে নৈঋত থেকে বইবে, ক্রমশ তার বেগ বাড়বে, সুৰ্য গা-ঢাকা দেবে, কিন্তু বৃষ্টি জোর পড়বে না। এ গেল। লণ্ডনের অন্তরীক্ষের খবর। জলস্থলের বৃত্তান্ত दवाँ यक । O লণ্ডন সহর টেম্স নদীর কুলে। किस अंच ciांक्षांद द्रौद्ध দেশের লোক আমি টেমসকে নদী বলি কেমন ক’রে ? লণ্ডনের যে-কোনো দু’টো চওড়া রাস্তাকে পাশাপাশি করলে টেমসের চেয়ে কম অপ্ৰশস্ত হয় না। ছোট হ’লে কি হয়, নদীটি নৌবাহ, বড় বড় জাহাজকে অনায়াসে কোল দেয়, বলিষ্ঠ শিশুর তদ্বন্দী মায়ের মতো। লণ্ডনের যোজনজোড়া জটার ভিতরে জাহাবীর মতো একে বেঁকে নিৰ্গমের পথ খুঁজছে, পিছু হটছে, মোড় ফিরছে। সহরের বাইরে তার উভয় তটে ছবির মতো বন, তার কুল সবুজ মখমলে মোড়া । কিন্তু সহরের ভিতরে তাঁর জল কলকাতার গঙ্গার মতো