পাতা:বিচিত্রা (প্রথম বর্ষ প্রথম খণ্ড).pdf/১৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

এই ক্ষুদ্র নিবন্ধের নাম “আমাদের কথা” না হলেই বোধ হয় ভাল ছিল, কারণ এ নিবন্ধকে আশ্ৰয় করে আমাদের বিশেষ কোনো কথাই বলবার নেই । প্ৰথম যখন কোনো মাসিক পত্ৰ প্ৰকাশিত হয় তখন সেই নব অভু্যদয়ের কারণ এবং ক্রিয়া সম্বন্ধে ‘সামান্য যা-হয়-কিছু জ্ঞাপন করার প্রথা আবহমান কাল চলে আসছে। সেই বহুআচরিত প্রথার অনতিবর্তনীয় প্রভাব থেকে আমরা পরিত্রাণ পেলাম না । ভুমিকা লেখার মূলে মানুষের স্বকৃত কৰ্ম্মের কৈফিয়ৎ দেওয়ার স্বাভাবিক আগ্ৰহ নিহিত আছে । মানব-প্রকৃতি সাধারণতঃ এমন জটিল যে, কোনো একটা নুতন অনুষ্ঠান আরম্ভ করবার আগে প্ৰথমেই মনে হয় তার একটা পরিচয় দেওয়া একান্ত আবশ্যক । অথচ অনেক সময়ে দেখা গেছে যে, সেই পরিচয় দেওয়ার ফলেই ভবিষ্যতে একটা অ-বোঝাবুঝির উৎপাত উপস্থিত হয়েছে। বিশ্ব-প্ৰকৃতির সম্পর্কে এই কৈফিয়ৎ দেওয়া-নেওয়ার কোনো বালাই নেই। আষাঢ় মাসের আকাশে কোনো দিন মেঘ আসে, কোনো দিন বা আসে না । কোনো দিনের মেঘে বৃষ্টিপাত হয়, চাষীরা মাঠে উপস্থিত হয়ে রোপণ-বপনের কাজ আরম্ভ করে, অন্য দিকে পুষ্পেপাদ্যানে যুথিকা-জালক বর্ষাগ্ৰবিন্দুতে সজল হুয়ে ওঠে । কোনো দিন মেঘের লীলা গুরু-গুরু। ডমরু-ধ্বনিতেই শেষ হয় ; সে-দিন গৃহ-শিখরেশিখরে ভবন-শিখীরা বিচিত্ৰ ভঙ্গীতে পুচ্ছোৎক্ষেপসহ নৃত্য আরম্ভ করে। কোনো দিন বা বর্ষণক্ষান্ত মেঘের শ্যামলিমায় অপূর্ব বর্ণে রামধনু ফুটে ওঠে; তা” দেখে সৌধ-বাতায়নে চকিত-হরিণী-নেত্রার মুগ্ধ-দৃষ্টি স্থির হয়ে আসে। কিন্তু মেঘের এই বিচিত্ৰ অসম আচরণের জন্য কোথাও কোনো দিন কোনো কৈফিয়ৎ তলব হয় না । তার জলে মানুষের মাঠ সরস হয়, তার রূপে মানুষের মন শ্যামল হয় । O বৈচিত্র্যের এই অসমতার মধ্যেই অফুরন্ত রসোপলব্ধির সৃষ্টি । দীর্ঘ-পপ যখন পঞ্জি হয়ে চলে তখন তার অনেকখানি পরিচয় একসঙ্গে জানতে পারায় পপিক-চিত্ত ক্লান্ত হয়ে পড়ে ; দক্ষিণে বামে যে-দিকে-হয় ফিরে একটা যা-হয়-কোনো অজানার মধ্যে প্ৰবেশ করবার জন্য সে ব্যগ্র হয়ে ওঠে। পরিচয়ের উৎপীড়নে তখন সে এতই পীড়িত ! রাসলীলার ধারা ধরা-বাধা পাথর-বাধানো ঋজু-পথে চালালে চলবে কেন ? বৈচিত্ৰ্য অনেক সময়ে নিজের স্বরূপ সাধারণ পরিচ্ছদে ঢেকে রাখে। সূৰ্য্য-রশ্মি সাধারণতঃ শাদা ; কিন্তু কঁচি-কলমের মধ্যে প্রবেশ করলে তা একেবারে ভেঙ্গে-চুক্সে