d) R R বিজয়ী বসন্ত । গণ-স্থানে চিরবিদায় লইয়া সহধৰ্ম্মিণী সমভিব্যাহারে আচাৰ্য্যাশ্রমে যাত্ৰা করিলেন । রাজা যথাসময়ে তপোবনে উপস্থিত হইয়া তদর্শনে কহিলেন, আহা ! তপোবনের কি আশ্চৰ্য্য মহিমা ! কি অনুশংসা অমায়িক ভাব ! পতঙ্গগণ নিৰ্ভয়ে বিহঙ্গের কুলায় কোটরে অবস্থিতি করিতেছে। কিঞ্চলুক বর্ষাভুর পদতলে লুষ্ঠিত হইতেছে। ভুজঙ্গ শিখিপুচ্ছোপরি বিস্তৃত-ফণা হইয় আতপতাপ নিবারণ করিতেছে। হরিণ-শিশু নিঃশঙ্কে কেশরিণীর স্তন্যপায়ী হইয়াছে। আমপাদপমণ্ডলী ফলে মুকুলে অবনতিশাখা হইয়া বায়ুহিল্লোলে ইতস্ততঃ দোলিত হইতেছে, দেখিয়া বোধ হইতেছে, তাহারা পরমার্থ-রাসে মত্ত হইয়া নৃত্য করিতেছে। বিহঙ্গকুল সচ্ছন্দমনে স্বজাতীয় স্বরে জগদীশ্বরের গুণগান করিতেছে। এইরূপে তপোবন-বাসী সকলে একতান হইয়া অনাদি অনন্ত পুরুষের পবিত্ৰ নাম, মহতী কীৰ্ত্তি, অকলঙ্ক মহিমা, বিচিত্ৰ শক্তি, অপার করুণা ও প্রেমের অকপট চিহ্ন প্ৰত্যক্ষ করিয়া বিমলানন্দনীরে নিমগ্ন হইয়াছেন। রাজা এইরূপ দেখিতে দেখিতে আচাৰ্য্যাশ্রমে উপস্থিত হইলেন । বসন্তকুমার রাজসিংহাসনে আরোহণ করিয়া, অন্তরে সংকল্পবজিত ও বাহিরে কর্তৃত্ব করিতে লাগিলেন। প্ৰশস্তচিত্ত শিষ্ট জনগণের প্রতি শিষ্টাচারে, পরদ্রোহী পাপপরায়ণ কলহকারীদিগকে দণ্ডবিধানে, রাজ্যশাসনে ব্যাপৃত থাকিলেন। একদা তিনি রাজকাৰ্য্য হইতে অবসরানন্তর নির্জন নিকেতনে বসিয়া, ধৰ্ম্মপুস্তক পাঠ করিতেছেন, এমন সময় সুকুমারী তথায় উপস্থিত।
পাতা:বিজয়-বসন্ত - জলধর সেন.pdf/১২৮
অবয়ব