OS বিজয়-বসন্ত । বিজয়চন্দ্ৰ, জনকের স্বভাব এরূপ বিপরীত ভাবাবলম্বন করিয়াছে জানিতে পারিয়া, অতিশয় ক্ষোভযুক্ত হইলেন, কিন্তু তজ্জন্য বাক্যস্ফোটও করিলেন না। একদিন তিনি সূৰ্য্যাস্তের কিঞ্চিৎ পূর্বে সহোদর-সমভিব্যাঙ্গারে প্রাসাদোপরি ইতস্ততঃ ভ্ৰমণ করিতেছেন, রাজমহিষী অন্তঃপুর হইতে নিরীক্ষণ করিয়া শাস্তাকে জিজ্ঞাসা করিলেন, শান্তে! বিজয়-বসন্তের অন্তঃপুরে না আসিবার কারণ কি ? আমি যে অবধি এখানে আসিয়াছি, তাতারা সেই অবধি বহির্বাটিতেই থাকে, এক দিনের জন্যেও অন্তঃপুরে আইসে না। আমার ইচ্ছা, অন্তঃপুরে আনিয়া লালন পালন করি। শান্ত কহিল, ঠাকুরাণী ! আপনি আপন পুত্ৰ পালন করিবেন, কাহার অনুমতির অপেক্ষা করিতেছেন ? আমি যাই বিজয়-বসন্তকে অন্তঃপুরে আসিতে কহি গিয়ে। এই বলিয়া শান্ত গমন করিল। মহিষী পিত্ৰালয় হইতে দুলতো নাম্বী এক পরিচারিকাকে সঙ্গে আনিয়াছিলেন। সেই দুলতা অন্তরালে থাকিয়া, মহিষী আর শাস্তাদাসীতে যে কথাবাৰ্ত্ত হইতেছিল, সমুদায় শুনিতে পাইয়া, নিৰ্জনে রাণীকে কহিল, ওলো দুৰ্জময়ি । শান্তার সঙ্গে গলাগলি হইয়া কি কথা কহিতেছিলে ? মনে বুঝি করেছ, সতিনীপুত্ৰ পালন করিবে ? রাণী কহিলেন, দুলতে, তোমার এমন দুৰ্ম্মতি দেখিতেছি কেন ? এমন কথা কহিও না, আমি মনে ব্যথা পাই। বিজয়-বসন্তের মা নাই, আমি তাদের মা হই ।
পাতা:বিজয়-বসন্ত - জলধর সেন.pdf/৩৮
অবয়ব