দ্বিতীয় অধ্যায়। \) কুমারকে বারংবার আকর্ষণ করিতে লাগিল। বিজয়চন্দ্র নিরুপায় হইয়া বিনয়পূর্বক কহিতে লাগিলেন, নগরপাল! তোমার দুটীি পায় ধরি, ক্ষান্ত হও, বসন্তকে কিছু বলিও না। এই দেখ, বসন্ত তোমার ভয়ে ব্যাকুল হইয়া আমাকে বেষ্টন করিয়া ধরিয়াছে, বায়ুচালিত কদলীপত্রের ন্যায় কম্পিত হইতেছে, ইহার চাদমুখ মলিন হইয়া গিয়াছে, নয়নে নিরন্তর বারি-ধারা বাহিতেছে, দেখিয়া দয়া হয় না ? তোমার হৃদয় কি এমন কঠিন ? নিৰ্দয় নগরপাল তথাপি নিবৃত্ত হইল না; এবং পূর্বাপেক্ষা অধিক আকর্ষণ করিতে লাগিল। বিজয়চন্দ্ৰ পুনর্বার কহিলেন, “ নগরপাল ! তোমার কঠিন বন্ধনে আমার হৃদয় বিদীর্ণ হইতেছে, বসন্তের অঙ্গ নিতান্ত কোমল, কখন সে বন্ধন-যাতনা সহ্য করিতে । পরিবেন, প্ৰাণে মরিবে । বসন্তকে বন্ধন করিতে যদি নিতান্তই প্ৰয়াস হইয়া থাকে, তবে তোমার শাণিত তরবারে অগ্রে আমার প্ৰাণদণ্ড করা ; পশ্চাৎ যেরূপ অভিরুচি করিও, আমার সাক্ষাতে বসন্তকে কিছু বলিও না, উহার যাতনা আমি কদাচ দেখিতে পারিব না, আমার হৃদয় বিদীণা হইতেছে। এই বলিয়া ক্ৰন্দন করিতে লাগিলেন । নগরপাল বিজয়চত্রের অনুনয়ে কৰ্ণপাতও করিল না, প্ৰত্যুত তাহার ক্রোড় হইতে বসন্তকুমারকে আকর্ষণ পূর্বক বন্ধন করিতে উদ্যত হইল। বসন্তকুমার একে শিশু, সহজেই ভীরু, কাঁপিতে কাঁপিতে কহিলেন, নগরপাল! আমি কিছুই দোষ করি নাই, আমাকে বেঁধ না, তোমার দুখানি পায় ধরি, ছেড়ে
পাতা:বিজয়-বসন্ত - জলধর সেন.pdf/৪৭
অবয়ব