8 R বিজয়-বসন্ত । নাই । পিতা অকারণে ক্ৰোধ করিয়া যদি কারাবদ্ধ করিতে আদেশ করিয়া থাকেন, তবে চল, যেখানে রাখিবে সেইখানেই থাকিব, বন্ধন করিয়া কেন অধিক ক্লেশ দাও । নিশা প্ৰভাতে তোমার হস্তে আমাদের নিশ্চয় মরণ, তবে কেন বন্ধন করিয়া অগ্ৰেই প্ৰাণ নাশ কর । না হয়, এখনি কেন প্ৰভাত-কালের কৰ্ম্ম সমাধা কর না । তাহা হইলে বন্ধন-যাতনা আর সাহা করিতে হইবে না। নির্দয় নগরপাল বিজয়চন্দ্রের বিনয়বাক্যে কৰ্ণপাতও করিল না, তাহার হস্তদ্বয় দৃঢ়ৰূপে বন্ধন করিয়া কষিতে লাগিল। বিজয়চন্দ্রের শরীর নবনীত-স্বরূপ সুকোমল। কঠিন বন্ধনের ক্লেশে হৃদয় বিদীণ হইতে লাগিল, এবং নয়নে অবিশ্রান্ত অশ্রু নিৰ্গত হইয়া বক্ষঃস্থল প্লাবিত করিল। নগরপাল বিজয়চন্দ্ৰকে বন্ধন করিয়া বসন্তকুমারকে বন্ধন করিতে উপক্ৰম করিল। বসন্তকুমার অতি শিশু ; নগরপালকে দেখিবামাত্ৰই ভয়ে ঠাহার প্রাণ উড়িয়া গেল ; তখন তিনি আতঙ্কে বিজয়চন্দ্ৰকে বেষ্টন করিয়া ধরিলেন এবং কঁাপিতে কাপিতে কহিলেন, দাদা ! ও কে ? উহাকে দেখিয়া ভয় হই তেছে, আমাকে কোলে কর। বিজয়চন্দ্ৰ বসন্তকুমারকে ব্যাকুল দেখিয়া শোকাৰ্ত্ত হইয়া বক্ৰভাবে হৃদয় দ্বারা আবৃত করিলেন। হস্ত-বন্ধন জন্য ক্ৰোড়ে করিতে পারিলেন না। কেবল নয়ননীরে অনুজের শিরোদেশ সিক্ত করিতে লাগিলেন। নগরপাল অন্ত্যজ জাতি, সহজে নির্দয়, বিজয়চন্দ্রের ক্রোড় হইতে অন্তর-কারণেচ্ছায় বসন্ত
পাতা:বিজয়-বসন্ত - জলধর সেন.pdf/৪৬
অবয়ব