G8 বিজয়-বসন্ত । তিনি দ্রুত প্ৰত্যাগমন করিলেন এবং কিঞ্চিৎ দূর হইতে বসন্তকুমারকে সোপান-শয্যায় শয়ান নিরীক্ষণ করিয়া কহিলেন, হে হৃদয়! তুমি যে আশঙ্কা করিয়া বিদীর্ণ হইতেছিলে, আমার ভাগ্যে তাহাঁই ঘটিয়াছে। আবার মনে করিলেন, বসন্ত ক্ষুধায় ব্যাকুল হইয়া বুঝি সোপান-শয্যায় নিদ্রা যাইতেছে, আমি কেন তাহার অমঙ্গল চিন্তা করিতেছি। অন্তঃকরণে এইরূপ বিত করিতে করিতে নিকটবৰ্ত্তী হইয়া, সচেতন-বোধে কহিলেন, বসন্ত উঠ উঠ, এত কাতর কেন ? নিদ্ৰালস্য ত্যাগ কর। আহা! সমুদয় দিন গত হইয়াছে, কিছুই খাও নাই। সূৰ্য্যের খরতর কিরণে চাদমুখ। আরক্ত হইয়া ক্রমে মলিন হইয়া গিয়াছে। আমি অনেক আয়াসে তোমার জন্য ফল আনিয়াছি, এই ধর, উঠিয়া ভক্ষণ করা। এইরূপ উত্তরোত্তর ডাকিতে ডাকিতে চৈত্যন্যাভাবি-বিবেচনায় বসন্তকে ক্ৰোড়ে করিতে উদ্যত হইয়া দেখিলেন, সাপদংশন-সদৃশ তাহার বিম্বাধরে বিম্ব উঠতেছে, শ্বাস প্ৰশ্বাস রুদ্ধ হইয়াছে। এই অমঙ্গল ঘটনা দর্শনে বিজয়চন্দ্ৰ, সৰ্পদংশনে অনুজের মৃত্যু বিবেচনায়, বসন্ত রে-বসন্ত ! এই শব্দ করিয়া উন্মলিত কদলী তরুর ন্যায় সোপানােপরি পতিত হইলেন। অনেক ক্ষণ পরে উঠিয়া বসন্তকুমারকে ক্ৰোড়ে করিয়া কহিলেন, বসন্ত! তুমি নগরপালের ভয়ে পিতার কোলে উঠিতে গিয়াছিলে, পিতা অনাদর করিয়া তোমাকে ভূমে নিক্ষেপ করিয়াছিলেন ; বুঝি সেই অভিমানে প্ৰাণ-ত্যাগ করিলে ? তোমা বিনা আমার আর কেহই নাই। মাতা ত্যাগ করিয়াছেন, পিতা ত্যাগ
পাতা:বিজয়-বসন্ত - জলধর সেন.pdf/৫৮
অবয়ব