তৃতীয় অধ্যায়। c করিলেন, ভাই তুমিও কি আমাকে পরিত্যাগ করিলে? আমার গতি কি হইবে ? আমি কাহার মুখপানে চাহিয়া দুঃখানল শীতল করিব ? দাদা বলিয়া কে আমার কোলে উঠিবে ? কিঞ্চিৎকাল থাকিয়া,শোকে বিহবল হইয়া পুনরায় কহিলেন,বসন্ত! এত নিদ্রালিস কেন ? তুমি না এখনি বলিয়াছ, ‘দাদা, আমার বড় ক্ষুধা হইয়াছে।” আমি অনেক পৰ্য্যটনে ফল আনিয়াছি ; এই ধর, ভক্ষণ করা। আমার প্রাণ বড় ব্যাকুল হইয়াছে, বক্ষঃস্থল বিদীণা হইতেছে, দুটী বাহু প্রসারিয়া আমার কোলে উঠিয়া একবার চাদমুখে দাদা বল, আমার তাপিত প্ৰাণ শীতল হউক। কিঞ্চিৎক্ষণ মৌনী থাকিয়া কহিলেন, বসন্ত ! তুমি উঠিলে না, তবে এই খানেই থাক, আমি চলিলাম। কিয়দর গমন করিয়া প্রত্যাগমনপূর্বক কহিলেন, বসন্ত ! আমি তোমাকে এক রাখিয়া কোথায় যাইতেছি। আমার হৃদয় বড় কঠিন, তুমি বুঝি ভয় পাইয়াচ, এস তোমাকে কোলে করি । তদনন্তর বসন্তকুমারকে বক্ষঃস্থলে ধারণপূর্বক শাস্তাকে উদ্দেশিয়া কহিলেন, শান্তে! তুমি যাহাকে কখন কোল হইতে নামিতে দাও নাই, যাহার মুখমণ্ডল কিঞ্চিৎ ঘৰ্ম্মাক্ত হইলে অঞ্চলের দ্বারা বাতাস করিয়াছ, যাহার শরীর কিঞ্চিৎ অসুস্থ হইলে ব্যতিব্যস্ত হইয়া ঔষধ-অন্বেষণে ব্যগ্ৰী হইয়াছ, এবং সুস্থ হইলে পরম সুখে কালাতিপাত করিয়াছ ; তোমার অঞ্চলের নিধি, যতনের ধন, সেই বসন্তকুমার আজি ধূলায় লুষ্ঠিত হইতেছে, শাস্ত্ৰ আসিয়া কোলে কর। বিজয়চন্দ্র এইরূপ নানাপ্রকার বিলাপ করিয়া বিবেচনা করিলেন, যদি বসন্ত আমাকে নিতান্তই
পাতা:বিজয়-বসন্ত - জলধর সেন.pdf/৫৯
অবয়ব