V8 বিজয়-বসন্ত । সে জন্য দুঃখ নাই, কিন্তু বসন্তকুমার বিজন বনে পড়িয়া জলাভাবে ত্ৰাহি ত্ৰাহি করিতেছে। সেই জনশূন্য অরণ্য মধ্যে জল-দানে কে তাহার প্রাণ রক্ষা করিবে ? হায় কি সর্বনাশ! এ দিকে দুরন্ত বারণ আমাকে বিনাশ করিতে আসিতেছে, ও দিকে পিপাসায় বসন্তকুমারের ওষ্ঠাগত-প্ৰাণ হইয়াছে। কি করি, এখানে এমন কেহ নাই, যে তাঁহাকে বসন্তের কথা বলিয়া দিই। হে করুণাময় পরমেশ্বর। মৃত্যুসময়ে আমি কাতরে এই প্রার্থনা করিতেছি, সেই নিরাশ্রয় বালককে রক্ষা কর । বিজয়চন্দ্র এইরূপ কহিতে কহিতে আতঙ্কে মূচ্ছিত হইয়া ধরাতালে পড়িলেন। মত্ত দন্তী তাঁহাকে করা-বেষ্টন-পূর্বক মস্তকে তুলিয়া প্ৰচণ্ড শব্দ করিতে করিতে ধাবিত হইল । এ দিকে বসন্তকুমার ক্ষুধা তৃষ্ণায় একান্ত অস্থির হইয়া মৃতপ্রায় ধূলায় পড়িয়া রহিয়াছেন, বাক্য-প্রয়োগের শক্তি নাই, তথাপি মৃদুস্বরে দাদা বলিয়া ক্ষণে ক্ষণে মুখ-ব্যাদান করিতেছেন; তাহার বিম্বাধর বিবৰ্ণ ও শুষ্ক হইয়া গিয়াছে ; চক্ষের জলে বক্ষঃস্থল প্লাবিত হইয়াছে। এমন সময় সারদ্বাজ মুনি সেই পথে গমন করিতেছিলেন। বসন্তকুমারকে তদাবস্থায় অবস্থিত দেখিয়া চিন্তা করিতে লাগিলেন—এই বালকট আকার প্রকারে রাজপুত্র অনুমান হইতেছে, কিন্তু কি জন্য এই বিজন বনে একাকী আসিয়া এই দশাগ্ৰস্থ হইয়াছে, বুঝিতে পারিতেছি না। অথবা আর কেহ ইহার সঙ্গে আসিয়াছিল, সে বিষয়ে আর সন্দেহ কি, যেহেতু দুইটী ঘোটক দেখিতেছি। এক্ষণে ইহাকে
পাতা:বিজয়-বসন্ত - জলধর সেন.pdf/৬৮
অবয়ব