କ୩ বিজয় বসন্ত । যামিনী জাগরণ করিল। বিজয়চন্দ্ৰ বাদায়িত্রী ও গায়িকার নিপুৰ ণতায়, এবং উৎপরীক্ষিকার বাগিতায় পরম পরিতুষ্ট হইলেন। সুখ-বিভােবরী বোধ হয় যেন শীঘ্রই বিভাত হইল। এইরূপে বিবাহব্রুিয়াকলাপ সম্পাদিত হইলে রাজ্ঞী প্রজাগণের অনুমন্ত্যনুসারে বিজয়চন্দ্রকে রাজপদে অভিষিক্ত করিলেন। তিনি রাজা হইয়া বিশেষ পরিশ্রমপূর্বক রাজকাৰ্য্য পৰ্য্যালোচনা করিতে লাগিলেন। তৎকালে যুদ্ধােনল একেবারেই নির্বাণ হইয়া গিয়াছিল। অতএব তিনি প্ৰজার হিতার্থেই সমুদয় সময় অতিবাহিত করিতে লাগিলেন। যে যে প্রদেশে জলকষ্ট ছিল, তথায় সরোবর খনন ও পয়োনালী প্ৰস্তুত করিয়া দিলেন ; রাজপথ সমুদায় পরিস্কৃত, বিদ্যালয়, চিকিৎসালয়, ধৰ্ম্মালয়, ও অতিথিশালা স্থাপন এবং কারালয়ে শিল্পকাৰ্য্য প্ৰচলিত করিলেন। বিজয়চন্দ্ৰ স্বয়ং কারালয়ে উপস্থিত হইয়া বন্দীদিগকে ধৰ্ম্মেপদেশ প্ৰদান করিতে লাগিলেন। বিমলা স্ত্রী কারালয়ে উপস্থিত হইয়া, শিল্পবিদ্যা শিক্ষা ও ধৰ্ম্মোপদেশ প্ৰদান করিতে অনুরক্ত হইলেন। যেমন জনশ্রুতি আছে, স্পর্শমণি স্পর্শ করিলে লৌহ স্বণ হইয়া থাকে, তদ্রুপ দুরন্ত দস্যদল ধৰ্ম্মেপদেশ পাইয়া কুপ্রবৃত্তি পরিত্যাগপূর্বক সৎপথের পান্থ হইতে লাগিল। ইহাতে বন্দীগণের সংখ্যা দিন দিন নৃত্যুন হইয়া কারাগার ক্রমে শূন্যাগার হইয়া উঠিল। সস্ত্রীক বিজয়চন্দ্রের এইরূপ দেশহিতকর কাৰ্য্যে রাজ্যস্থ সমস্ত মনুষ্যই তঁহাদিগকে সাক্ষাৎ দেবতার ন্যায় পূজা করিতে লাগিল।
পাতা:বিজয়-বসন্ত - জলধর সেন.pdf/৯৬
অবয়ব