পাতা:বিজয়-বসন্ত - জলধর সেন.pdf/৯৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চতুর্থ অধ্যায়। I'S এইরূপে বিজয়চন্দ্ৰ বিদ্যাবতী প্ৰিয়তমার সহবাসে একাসনে উপবিষ্ট হইয়াই, এক সময়ে, কখন ইতিহাস আলোচনাপূর্বক দেশ বিদেশের মানব-প্রকৃতি পৰ্য্যালোচনা, কখন ভূবিদ্যা আলোচনা করিয়া দেশবিদেশ-ভ্রমণ, কখন ভূতত্ত্ববিদ্যা পরিশীলন করিয়া অবনীগর্ভে গমন, কখন জ্যোতিঃশাস্ত্ৰ আলোচনা করিয়া অন্তরীক্ষে বিচরণ, কখন পদার্থবিদ্যা ও ধৰ্ম্মশাস্ত্ৰ অধ্যয়ন করিয়া ঈশ্বরের প্ৰেমসমুদ্রে নিমজ্জন করিতে লাগিলেন। এতাদৃশ সুখের সন্নিধানে ইতিরোন্দ্ৰিয়-সুখ কত অকিঞ্চিৎকার, র্যাহারা বিদ্যাবস্তুৰ্য্যে, তাহারাই জানিতে পারেন। নতুবা যেমন পতিবিলাসিনী পতিসহবাস-জনিত সুখ কুমারীকে প্ৰকাশ করিয়া বলিতে পারে না, তদ্রুপ বিদ্বন্তৰ্য্য আপন হৃদয়গত সুখরাশি অবিদ্বন্তৰ্য্যকে প্ৰকাশ করিয়া বলিতে সমর্থ হন না। এক দিন বিজয়চন্দ্ৰ প্ৰকোষ্ঠে বসিয়া উদ্যানের তরুরাজির স্বতঃসিদ্ধ শোভা সন্দর্শন করিতেছেন, এমত সময়ে বিমলা নিকটবৰ্ত্তিনী হইয়া সুমধুর সম্ভাষণে কহিলেন, হৃদয়বল্লভ ! বনরাজি, পশু ও দ্বিজজাতির স্বাভাবিক শোভা বিলোকন করিতে আমার নিতান্ত বাসনা হইতেছে। যদি আপনার অভিলাষ হয়, তবে চিত্ততোষ বিপিনে আমার পিতার যে প্ৰমোদ-মণ্ডপ আছে, তথায় কিছুকাল অধিবাস করিয়া স্বভাব-শোভা সন্দর্শন করি। বিজয়চন্দ্ৰ প্ৰণয়িনীর সৎপ্রবন্ধে তৎক্ষণাৎ অনুমোদন করিলেন। এবং পরদিন উষা-সময়ে গাত্ৰোথান করিয়া মহিষীর নিকট বিদায় লইয়া অত্যন্ন অনুযাত্রীর সহিত সস্ত্রীক অরণ্যে প্রবেশ করিলেন।