পাতা:বিদ্যাসাগর-প্রসঙ্গ.pdf/১০০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬৬
বিদ্যাসাগর-প্রসঙ্গ
“বীটন স্কুল সংক্রান্ত সমস্ত কাগজপত্র পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ২৩এ [ফেব্রুয়ারি] আমার হাতে দিয়াছেন। তিনি বহুক্ষণ ধরিয়া আমার সহিত বিদ্যালয়-গৃহে এবং সংলগ্ন জমিতে বেড়াইলেন এবং ইহা হিন্দু-মহিলাদের থাকিবার পক্ষে উপযোগী করিতে হইলে কি কি দরকার, সে সম্বন্ধে আলোচনা করিলেন।
“যতদিন কলিকাতায় থাকিবে, ততদিন নর্ম্মাল স্কুলটি যে বিশেষ ফললাভ করিবে, এমন আশা তিনি করেন না। কিন্তু তবুও নর্ম্মাল স্কুল প্রতিষ্ঠায় তিনি আমাকে যথাসাধ্য সাহায্য করিতে প্রতিশ্রুত হইয়াছেন।”

 বিদ্যাসাগরের কথাই ফলিল। তিন বৎসর যাইতে-না-যাইতেই পরবর্ত্তী ছোটলাট স্যর জর্জ ক্যাম্পবেল বীটন বিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট নর্ম্মাল স্কুলটি তুলিয়া দিবার আদেশ দিলেন। এইরূপ অনুষ্ঠানকে সফল করিতে গেলে দেশের রীতি ও সংস্কার অনুসারে যে স্কুলটি প্রতিষ্ঠিত ও পরিচালিত করিতে হইবে, এবিষয়ে তাঁহার নিশ্চিত ধারণা হইয়াছিল।[১] ডিরেক্টরের নিকট নিম্নলিখিত আদেশ-পত্র প্রেরিত হইল:—

“সাধারণভাবে সমস্ত বিষয়টি পর্যালোচনা করিয়া দেখিলে বেশ বোঝা যায়, তিন বৎসর ধরিয়া পরীক্ষা করিবার পরও ফিমেল নর্ম্মাল স্কুলটিকে সফল করিতে পারা যায় নাই। এসব বিষয়ে যাঁহারা বিশেষ অভিজ্ঞ, সেই-সব মহিলার সহিত ছোটলাট প্রায় একমত। তাঁহাদের মত এই, নারীদের ধর্ম্মসংশ্রবহীন শিক্ষা ও সঙ্গে সঙ্গে কিঞ্চিৎ
  1. মিস্ কার্পেণ্টারের অর্থে, কিন্তু তাঁহার ইচ্ছার বিরুদ্ধে, বাবু কেশবচন্দ্র সেন এক প্রতিদ্বন্দ্বী বিদ্যালয় স্থাপন করেন।...মিস্ কার্পেণ্টার ইহার পরিচালনে তাঁহার দেওয়া টাকা ব্যয় করিতে দিতে অস্বীকার করিয়াছেন, এবং তাঁহারই বিশেষ আপত্তিতে বাবু কেশবচন্দ্র সেন এই স্কুল উঠাইয়া দিতে উদ্যত হইয়াছেন।”—D. P. Ι. to Bengal Govt. dated 27 Decr. 1871. Ed. Con. Jany. 1872, Nos. A 30-36.