পাতা:বিদ্যাসাগর-প্রসঙ্গ.pdf/১২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সরকারের বে-সরকারী পরামর্শদাতা
৮৭

 ১৮৬৩ নভেম্বর হইতে বিদ্যাসাগর পরিদর্শন আরম্ভ করেন। এই পরিদর্শনের অভিজ্ঞতাস্বরূপ তিনি ১৮৬৪, ৪ এপ্রিল সরকারের নিকট এক বিবরণী পাঠাইলেন। ছাত্রদের শিক্ষা-বিষয়ে অধিকতর উন্নতি ও ব্যুৎপত্তি সংক্রান্ত কতকগুলি ব্যবস্থার প্রস্তাব ইহাতে ছিল। বৎসরের প্রারম্ভে তিনি আর একটি বিবরণী দাখিল করেন। তাহার কিয়দংশ উদ্ধৃত করিতেছি,—

ওয়ার্ডস ইনষ্টিটিউশন পরিচালনার্থ নিয়মাবলীর ১১ সংখ্যক নিয়মের দিকে আমি বিশেষভাবে দৃষ্টি আকর্ষণ করিতে চাই। এই নিয়মে আছে ‘কেবল অতি গুরু অপরাধেই শারীরিক শাস্তির বিধান হইবে।’ অর্ডার-বুক হইতে দেখা যাইতেছে প্রায় প্রতিমাসেই এক অথবা অধিকসংখ্যক বালক চার হইতে বার ঘা পর্য্যন্ত বেত্রাঘাত লাভ করিয়াছে। যেসকল কারণে তাহারা এইরূপ শাস্তি পাইয়াছে তাহা ‘গুরু অপরাধের’ পর্যায়ে পড়ে বলিয়া আমার মনে হয় না। একটিমাত্র ঘটনা সম্ভবতঃ ইহার ব্যতিক্রমস্থল, সেটিও আবার ভালরূপে বর্ণিত হয় নাই। কিন্তু আমার মতে অপরাধের প্রকৃতি যাহাই হোক না, নাবালকদের শিক্ষায় দৈহিক শাস্তি সম্পূর্ণরূপে পরিহার করা কর্ত্তব্য। এই শাস্তি অনিষ্টকর পরিণামের জন্য সকল শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান হইতেই বর্জ্জিত হইয়াছে। বেত্র ব্যবহার না করিয়াও সেই সকল প্রতিষ্ঠানে শত শত ছাত্র পরিচালিত হইতেছে। ওয়ার্ডস ইনষ্টিটিউশনে ইহার প্রয়োজন কিছুমাত্র অনুভূত হয় না। আমার মতে এই প্রতিষ্ঠানের অন্তর্ভুক্ত নাবালক জমিদারদের প্রতি এরূপ কঠোর ব্যবহার মোটই শোভন নয়। বালকদের শিক্ষাদান-কার্য্যে আমার কিছু অভিজ্ঞতা আছে। আমার দৃঢ়বিশ্বাস, দৈহিক শাস্তি পরিণামে অশুভজনক; ইহাতে শাস্তিপ্রাপ্ত বালক না শোধরাইয়া বরং নষ্ট