পাতা:বিদ্যাসাগর গ্রন্থাবলী (শিক্ষা ও বিবিধ).djvu/১৬৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

38V. বিদ্যাসাগর-গ্রন্থাবলী—শিক্ষা তদীয়নামানুসারে স্বাবিষ্কৃত নক্ষত্রের নাম জর্জিয়ম সাইডস অর্থাৎ জর্জনক্ষত্র রাখিলেন। কিন্তু ইয়ুরোপের প্রদেশান্তরীয় জ্যোতির্বিদেরা ইহার য়ুরেনস এই নাম নির্দেশ করিয়াছেন ; আর আবিষ্কৰ্ত্তার নামানুসারে এই গ্রহকে হর্শেলও বলিয়া থাকেন। অনন্তর হর্শেল ক্রমে ক্রমে স্বাবিষ্কৃত নূতন গ্রহের ছয় পারিপাশ্বিক অর্থাৎ চন্দ্র প্রকাশ করিলেন। জর্জিয়ম সাইডসের আবিক্রিয়াবাৰ্ত্তা প্রচার হইলে, হশেলের নাম এক বারে জগদ্বিখ্যাত হইল। কয়েক মাসের মধ্যেই, ইংলণ্ডেশ্বর এই অভিপ্রায়ে তাহার বার্ষিক ত্রিসহস্র মুদ্রা বৃত্তি নিৰ্দ্ধারিত করিয়া দিলেন যে, তিনি বাথনগরীর কৰ্ম্ম পরিত্যাগ করিয়া, নিশ্চিন্ত মনে, বিদ্যানুশীলনে রত থাকিতে পরিবেন । হর্শেল, তদনুসারে ঐ কৰ্ম্ম পরিত্যাগ করিয়া, উইণ্ডসরসন্নিহিত সোনামক স্থানে অবস্থিতি নিরূপণ করিলেন। অতঃপর, তিনি অনন্তমনা ও অনন্ত কৰ্ম্ম হইয়া কেবল পদার্থবিদ্যার অনুশীলনে রত হইলেন । বাস্তবিকও, ক্রমাগত দূরবীক্ষণ নির্মাণ ও নভোমণ্ডলীপৰ্য্যবেক্ষণ দ্বারাই, তিনি জীবনের শেষ ভাগ যাপন করিয়াছিলেন । যে নূতন গ্রহের আবিক্রিয়া নির্দিষ্ট হইল, তিনি তদ্ব্যতিরিক্ত নানাবিধ মহোপকারক অভিনব অধিস্ক্রিয়া ও অতর্কিতচর বহুতর নিপুণ প্রগাঢ় কল্পনা দ্বারা জ্যোতির্বিদ্যার বিশিষ্টরূপ শ্ৰীবৃদ্ধি সম্পাদন করিয়াছেন। তিনি পূৰ্ব্ব পূর্ব অপেক্ষায় অধিকায়ত ও অধিকশক্তিক প্রতিফলিক দূরবীক্ষণ নিমাণবিষয়ে কতিপয় মহোপকারিণী সুবিধা প্রদর্শন করেন। তিনি সোনামক স্থানে, ইংলণ্ডেশ্বরের নিমিত্ত চত্বারিংশৎপাদদীর্ঘ যে দূরবীক্ষণ প্রস্তুত করেন, তাহাই সৰ্ব্বাপেক্ষায় বৃহৎ । ১৭৮৫ খৃঃ অব্দের শেযে, তিনি এই অতিবৃহৎ নল নিমাণ করিতে আরম্ভ করিয়াছিলেন । পরে, ১৭৮৯ খৃঃ অব্দের ২৭এ আগষ্ট, উহ। এক উপগ্রহ, পৃথিবী গ্রহের পারিপাশ্বিকমাত্র। এক সুষ্য ও তাঙ্গর চতুদিকে পারভ্রমণকারী যাবতীয় গ্রহ, উপগ্রহ ও ধূমকেতুগণ লইবা এক সৌর জগং হয়। স্বয্য সকলের কেন্দ্র ; আর বুধ, শুক্র, পৃথিবী, মঙ্গল, বেষ্ট, পল্লস, জনে, অস্টি যা, ঈবি, আইরিস, ফ্লোর, ডায়েনা, বৃহস্পতি, শনৈশ্চর, যুরেনস ও নেপচুন প্রভৃতি গ্রহ সূর্য্যের চতুদিকে পরিভ্রমণ করে । পুথিবীর একমাত্র পারিপাশ্বিক, বৃহস্পতির চারি, শনৈশ্চরের আট, য়ুরেনসের ছয়, নেপচুনের এ পর্য্যন্ত একটিমাত্র বিজ্ঞাত হইয়াছে। অকুমান হয়, এই সৌর জগতে বহুসহস্র ধূমকেতু আছে। গ্রহ উপগ্রহ গণ নিজে তেজোময় নহে, তেজোময় স্বৰ্য্যের আলোক পাত দ্বারা ঐরূপ প্রতীয়মান হয়। জ্যোতিবিদেরা ইহা প্রায় একপ্রকার স্থির করিয়াছেন, যে সকল নক্ষত্রের প্রভা চঞ্চল তাহার এক এক স্বৰ্য্য, নিজে তেজোময় এবং এক এক জগতের কেন্দ্রভূত। এই অপরিচ্ছিন্ন বিশ্বমধ্যে আমাদের এই সৌর জগতের ন্যায় কত জগৎ আছে, তাহার ইয়ত্তা করা কাহারও সাধ্য নহে । 晦