পাতা:বিদ্যাসাগর গ্রন্থাবলী (শিক্ষা ও বিবিধ).djvu/১৮৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বোধোদয়—ইন্দ্রিয় ×\ა() লোক এমন তুর্ভাগ্য যে, তাহাদের শ্রবণশক্তি নাই ; তাহাদিগকে বধির অর্থাৎ কালা বলে ; কেহ কিছু কহিলে, অথবা কোনও শব্দ করিলে, কালারা শুনিতে পায় না । নাসিক নাসিকাকে ভ্ৰাণেন্দ্রিয় বলে । নাসিক। দ্বারা গন্ধের আম্রাণ পাওয়া যায়। নাসিক না থাকিলে, কি ভাল, কি মন্দ, কোনও গন্ধের আঘ্ৰাণ পাওয়া যাইত না । নাসিকারন্ধের অভ্যন্তরে কতকগুলি সূক্ষ্ম সুহ্ম স্বায়ু সঞ্চারিত আছে। ঐ সকল স্বায়ু দ্বার। গন্ধের আভ্রাণ পাওয়া যায়। যে গন্ধের আভ্রাণে মনে প্রীতি জন্মে, তাহাকে সুগন্ধ ও সৌরভ বলে। যে গন্ধের আভ্রাণে অসুখ ও ঘৃণাবোধ হয়, তাহাকে দুর্গন্ধ বলে। চন্দন ও গোলাপের গন্ধ সুগন্ধ। কোনও বস্তু পচিলে যে গন্ধ হয়, তাহাকে দুর্গন্ধ বলে। জিহব। জিহবা দ্বারা সকল বস্তুর আগস্বাদ পাওয়া যায় ; এজন্য জিহবাকে রসনেন্দ্রিয় বলে । রসন শব্দের অর্থ আস্বাদন । জিহবার অন্য এক নাম রসনা । জিহবা না থাকিলে, আমরা কোনও বস্তুর আস্বাদ বুঝিতে পারিতাম না। জিহবার অগ্রভাগে কতকগুলি সূক্ষ্ম সূক্ষ্ম স্নায়ু সম্বদ্ধ আছে। মুখের ভিতর কোনও বস্তু দিলে, ঐ সকল স্বায়ু দ্বারা তাহার স্বাদ গ্রহ হয় । বস্তুর আস্বাদ নানাবিধ । গুড়ের আস্বাদ মিষ্ট । তেতুল অম্ল বোধ হয়। নিম ও চিরতা তিক্ত লাগে । যাহা খাইতে ভাল লাগে, তাহাকে সুস্বাদ বলে ; যাহা মন্দ লাগে, তাহাকে বিস্বাদ বলে। কোনও কোনও বস্তুর কিছুই আস্বাদ নাই ; মুখে দিলে না অম, না মিষ্ট, না তিক্ত, না কটু, কিছুই বোধ হয় না ; যেমন গদ, চুয়ান জল ইত্যাদি । ত্বক ত্বক স্পর্শেন্দ্ৰিয় । ত্বক দ্বারা স্পৰ্শজ্ঞান জন্মে। ত্বক সকল শরীর ব্যাপিয়া আছে, এবং সমস্ত ত্বকেই স্নায়ু সঞ্চারিত আছে ; এজন্য শরীরের সকল অংশেই স্পৰ্শজ্ঞান হইয়। থাকে। কিন্তু, সকল অঙ্গ অপেক্ষ, হস্তই স্পৰ্শজ্ঞানের প্রধান সাধন । অঙ্গুলির অগ্রভাগে যে অতি সূক্ষ্ম সূক্ষ্ম স্বায়ু আছে, তাহ দ্বারা অতি উত্তম স্পৰ্শজ্ঞান হয়। অন্ধকারে যখন দেখিতে পাওয়া যায় না, তখন, হস্ত ও অন্ত অন্ত অবয়ব দ্বারা স্পর্শ করিয়া,