পাতা:বিদ্যাসাগর জীবনচরিত - শম্ভুচন্দ্র বিদ্যারত্ন.pdf/১১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
চাকরি।
১১১

বাসা ছিল। বাল্যকালে উক্ত সিংহের পরিবারবর্গ, অগ্রজ মহাশয়কে যথেষ্ট স্নেহ করিতেন। উক্ত সিংহের মৃত্যুর পর, তাঁহার পুত্র ভুবনমোহন সিংহের দুরবস্থা হইলে, উহাকে সাংসারিক-ব্যয়-নির্ব্বাহার্থে মাসে মাসে ৩০৲ টাকা প্রদান করিতেন। উক্ত ভুবনমোহন সিংহের মৃত্যুর পর, উহাঁর পত্নীকেও ঐ টাকা প্রদান করিয়া আসিয়াছেন। এতদ্ব্যতীত উহাঁর কন্যার বিবাহের সমস্ত ব্যয় নির্ব্বাহ করিয়াছিলেন এবং উহাঁর অভিনব জামাতার কর্ম্ম করিয়া দিয়াছিলেন।

 ঐ সময়ে জননীদেবীর মাতৃষ্বসার পুত্র শ্যামাচরণ ঘোষাল, কলিকাতায় লৌহসিন্দুকের ও তাওয়া চাটু প্রস্তুতের ব্যবসা করিতেন। আমরা দুই ভ্রাতা পঠদ্দশায় তাঁহার বাসায় তিন মাস ছিলাম। নানা কারণে ব্যবসায়ে ক্ষতিগ্রস্ত হইয়া, তিনি অত্যন্ত কষ্টে পড়িয়াছেন এবং পীড়ায় আক্রান্ত হইয়া মৃতকল্প ও শীর্ণকায় আছেন শুনিয়া, দাদা আমার দ্বারা উক্ত শ্যামাচরণ ঘোষাল মাতুল মহাশয়কে ডাকাইয়া বলেন যে, “আপনি মাসিক কয় টাকা পাইলে, দেশে নিশ্চিন্ত হইয়া বসিয়া থাকিতে পারেন?” তাহাতে তিনি বলেন, “যদি যাবজ্জীবন মাসে মাসে ১০৲ টাকা করিয়া দিতে পার, তাহা হইলে নিশ্চিন্ত হইয়া দেশে অবস্থিতি করিতে পারি। আমার দ্বিতীয় কথা এই যে, তিনটি ভ্রাতুপুত্রকে বীরসিংহায় তোমার বাটীতে রাখিয়া, অন্নবস্ত্র দিয়া লেখাপড়া শিক্ষা দিতে হইবে।” অগ্রজ, তাঁহার প্রস্তাবে সম্মত হইয়া, মাসে মাসে ঐ দশ টাকা প্রদান করেন। আর উহাঁর তিনটী ভ্রাতুস্পুত্রকে বাটীতে রাখিয়া লেখাপড়া শিক্ষা দিয়া, বিষয়কর্ম্মে নিযুক্ত করিয়া দেন ও পরে তাঁহার পুত্রকেও লেখাপড়া শিখাইয়া বিষয়কর্ম্মে নিযুক্ত করিয়া দেন।

 বাবু প্রসন্নকুমার সর্ব্বাধিকারী মহাশয়, হিন্দুকলেজে শিক্ষালাভ করিয়া, সর্ব্বোৎকৃষ্ট এস্‌কলার্শিপ মাসিক ৪০৲ টাকা ও স্বর্ণ-মেডেল প্রাপ্ত হইয়াছিলেন। তৎকালে বাবু প্রসন্নকুমার সর্ব্বাধিকারী। ভালরূপ ইংরাজী শিক্ষা করিয়াছিলেন, তাহা প্রকাশ পাইয়াছিল। কোন কারণবশতঃ তাঁহাকে ঢাকা-