পাতা:বিদ্যাসাগর জীবনচরিত - শম্ভুচন্দ্র বিদ্যারত্ন.pdf/১২৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিধবাবিবাহ।
১২১

কেহ বিলক্ষণ গালি দিতেও লাগিল, কিন্তু তিনি তাহাতে কর্ণপাতও করেন নাই। অনেকেই স্ব স্ব বিধবা দুহিতা বা ভগিনী কিম্বা ভাগিনেয়ীর বিধবাবিবাহ দিবার জন্য সর্ব্বদা অগ্রজ মহাশয়ের নিকট গতি-বিধি করিতে লাগিলেন। বিধবার বিবাহ হইলে, উহার গর্তসম্ভূত সন্ততিগণের রাজকীয় আইনানুসারে মৃত পিতার বিষয়ের উত্তরাধিকারী হইবার জন্য গবর্ণমেণ্টে আবেদন করা কর্তব্য, এই বিষয়ে তৎকালের হোমডিপার্টমেণ্টের সেক্রেটারি সার্‌ সিসিল বীডন, সুপ্রীম কৌন্সেলের মেম্বরগণ এবং লেপ্টেনেণ্ট গবর্ণর হেলিডে সাহেব প্রভৃতি আইন পাশের অবেদন জন্য, অগ্রজ মহাশয়কে উপদেশ প্রদান করেন। তদনুসারে প্রায় দুই সহস্র লোকের স্বাক্ষর করাইয়া, আবেদন-পত্র গবর্ণমেণ্টে প্রেরিত হয়। গবর্ণমেণ্টের কৌন্সেলের বিচারে, হিন্দুশাস্ত্রানুসারে বিধবার পুনর্ব্বার যখন বিবাহ হইতে পারে, তখন বিধবার গর্তজাত পুত্র ঔরসজাত পুত্র বলিয়া, পৈতৃক-সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হইবে, এই ব্যবস্থা বিধিবদ্ধ হইল। ইংরাজী ১৮৫৬ খৃঃ অব্দের ১৩ই জুলাই, এই আইন পাশ হইল। ইহার নাম ১৮৫৬ সালের ১৫ আইন হইল। এই সংবাদে ভারতবর্ষের সকলেই মনে মনে পরম আহ্লাদিত হইলেন। তৎকালে গ্রাণ্ড সাহেব, আইন-পাশ-বিষয়ে আশাতীত সাহায্য করিয়াছিলেন। তজ্জন্য ভারতবাসী হিন্দুমাত্রেই তাঁহার নিকট কৃতজ্ঞতা-পাশে বন্ধ আছেন। গ্রাণ্ড সাহেবকে অভিনন্দন-পত্র দিবার সময়ে, অগ্রজ মহাশয়, কৃষ্ণনগরের রাজা প্রতাপচন্দ্র সিংহ বাহাদুর, বাবু রামগোপাল ঘোষ, পণ্ডিতাগ্রগণ্য তারানাথ তর্কবাচস্পতি প্রভৃতি অনেকেই গ্রাণ্ড সাহেবের বাটীতে গমন করেন। কৃষ্ণনগরের রাজা শ্রীশচন্দ্র বাহাদুর স্বহন্তে উক্ত সাহেবকে অভিনন্দন-পত্র প্রদান করেন। বিধবাবিবাহ আইনবদ্ধ করিবার জন্য, গবর্ণমেণ্টের নিকট আবেদনপত্র প্রেরিত হইলে পর, তৎকালের কয়েক ব্যক্তি সন্তোষপুর্ব্বক অগ্রজ মহাশয়ের নামে ঐ বিষয়ের কতকগুলি সঙ্গীত রচনা করিয়াছিলেন; তন্মধ্যে নিম্নলিখিত একটি সঙ্গীত এস্থলে সন্নিবেশিত করা গেল।