পাতা:বিদ্যাসাগর জীবনচরিত - শম্ভুচন্দ্র বিদ্যারত্ন.pdf/১৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিধবাবিবাহ।
১৩৫

তোমায় টাকা দিতে বাধ্য হইব।” ইহা শুনিয়া, অগ্রজ বলিলেন, “আমি কখনও কাহারও নামে নালিশ করি নাই, অতএব আপনার নামে কি প্রকারে অভিযোগ করিব? ঐ টাকা আমি নিজে ঋণ করিয়া পরিশোধ করিব। আপনার কথায় বিশ্বাস করিয়া, মফঃস্বলে বালিকাবিদ্যালয় সকল স্থাপন করা হইয়াছে; শিক্ষকগণকে কয়েক মাসের বেতন না দিয়া, কিরূপে জবাব দেওয়া যায়?” এই বলিয়া মর্ম্মান্তিক ক্রোধান্বিত হইয়া প্রস্থান করেন।

 দ্বিতীয়তঃ হুগলি, নদীয়া, বর্দ্ধমান, মেদিনীপুর এই জেলা-চতুষ্টয়ের স্কুলসমূহের এম্পিসিয়াল ইন্‌স্পেক্টারের পদে তিনি নিযুক্ত ছিলেন। ঐ সকল জেলায় বিদ্যালয় সমূহের যেরূপ উন্নতি পরিদর্শন করেন, তদনুযায়ী রিপোর্ট করিয়া থাকেন; তজ্জন্য ডিরেক্টার অর্থাৎ শিক্ষাসমাজের কর্ম্মাধ্যক্ষ স্পষ্ট প্রকাশ করিয়া বলেন, “এতদপেক্ষা উৎকৃষ্ট অর্থাৎ ভালরূপ সাজাইয়া রিপোর্ট করিবে, নচেৎ সাধারণের নিকট গৌরব হইবে না।” অগ্রজ বলিলেন, “যাহা হইয়াছে আমি তাহাই লিখিব, বাড়াইয়া লেখা আমার কর্ম্ম নহে। যদি ইহাতে সন্তুষ্ট না হন, তাহা হইলে আমি কর্ম্ম পরিত্যাগ করিতে প্রস্তুত আছি।”

 তৃতীয়তঃ যৎকালে গবর্ণমেণ্ট, সংস্কৃত-কলেজের বাটী নির্ম্মাণ করেন, তৎকালে গবর্ণমেণ্টের উদ্দেশ্য ছিল যে, মধ্যস্থলের উন্নত দ্বিতল বাটীতে উক্ত কলেজের অধ্যাপকগণের বাসাবাটী হইবে, আর ঐ বাটীর উভয় পার্শ্বের একতলা ভবনে বিদ্যার্থিগণ বসিয়া অধ্যয়ন করিবে। কিন্তু দুর্ভাগ্যপ্রযুক্ত তৎকালের অধ্যাপকবর্গ বলিলেন, “স্নেচ্ছের ভবনে বাসা করা কোনও রূপে হইবে না।” একারণ, মধ্যস্থলের দ্বিতল-ভবনে শিক্ষাকার্য্য় সমাধা হইয়া আসিতেছে। উভয় পার্শ্বের গৃহ খালি পড়িয়া আছে। তৎকালে গবর্ণমেণ্ট, বিদ্যালয়ের উন্নতির অভিপ্রায়ে নিম্নশ্রেণীর ছাত্রগণকে মাসিক ৫৲ টাকা বৃত্তি ও উচ্চশ্রেণীর ছাত্রগণকে মাসিক ৮৲ টাকা বৃত্তি প্রদান করিতেন। কিছু দিন পরে, তৎকালের গবর্ণর জেনেরাল লর্ড বেণ্টিঙ্ক, সংস্কৃত-কলেজ উঠাইয়া দিবার উদ্যোগ পাইলে, কলেজের শিক্ষক জয়গোপাল তর্কালঙ্কার প্রভৃতি