পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৪৯৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বর্দ্ধমানে ম্যালেরিয়া।
৪৫৯

হাশয় তাহার উপর বড় অসন্তুষ্ট হইতেন, এমন কি তাহার সহিত আর বাক্যালাপও করতেন না। কেহ যদি ভর্ৎসিত হইয়াও নীরব থাকিত বা ক্ষমা চাহিত, তাহা হইলে বিদ্যাসাগর মহাশয় অবসরক্রমে তাহাকে সান্ত্বনা করিতেন। ইহা বিদ্যাসাগর মহাশয়ের চরিত্রাভ্যাস। সেই জন্য প্রাগুক্ত ঘটনা সম্বন্ধে বিশ্বাস করিতে প্রবৃত্তি হয় না।

 বিদ্যাসাগর মহাশয়ের শরীর ভাঙ্গিয়াছে। রোগে দেহযষ্টি ক্ষীণবল হইয়াছে। তবুও কিন্তু কার্য্যের বিরাম নাই। বর্দ্ধমানে আবার কঠোর কার্য্যকারিতায় প্রয়োজন হইল। ১৮৬৮ সালে বর্দ্ধমানে ভীষণ ম্যালেরিয়া জ্বরের সংহার-মূর্তি দেখা দিয়াছিল। ১৮৬৩ সালের দুর্ভিক্ষ-দৃশ্যে যাঁহার করুণ বুক বিদীর্ণ হইয়াছিল এবং তাহাতে অবিশ্রান্ত শোণিত স্রোত ছুটিয়াছিল; আজ বর্দ্ধমানের ম্যালেরিয়ায় কি তিনি স্থির থাকিতে পারেন? সংবাদপত্রে কোটি কণ্ঠের কাতর ক্রন্দন উত্থিত হইল। রোগে ত্রাহি ত্রাহি; কিন্তু চিকিৎসা করিবার লোক নাই। দারুণ দুন্দুভিনাদে সংবাদপত্রসমূহে এ সাংঘাতিক সংবাদ বিঘোষিত হইতে লাগিল, সে সময় কি যে মর্মান্তিক হুলস্থুল কাণ্ড উপস্থিত হইয়াছিল, তৎকালীন সংবাদপত্রের পাঠকমাত্রেই তাহা বলিতে পারেন। সেই মহামারী ব্যাপার বর্ণনাতীত। হিন্দু-পেট্রিয়ট-সম্পাদক সে লোকক্ষয়কর কাণ্ডের প্রতিকার প্রত্যাশায় মুহুর্মুহু চীৎকার করিয়া, গবর্ণমেণ্টের চিত্তাকর্ষণ করিতে তিলমাত্র ত্রুটী করেন নাই।

 স্বয়ং বিদ্যাসাগর মহাশয় রোগীদিগের চিকিৎসার্থ “ডিস্পেন্সারি” স্থাপন করিয়াছিলেন। ঔষধ-পথ্যের যথারীতি